আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৭ বার
চিলিতে রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে কয়েক হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর অঙ্গীকার করা কট্টর ডানপন্থী নেতা হোসে আন্তোনিও কাস্টের জয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী জ্যানেট হারা প্রথম দফায় এগিয়ে থাকলেও এবার কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে পারেন।
সান্তিয়াগো থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
অপরাধ ও অভিবাসন ইস্যুতে তীব্র সংশয়ের মধ্যে এবারের নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নয় সন্তানের জনক অভিজ্ঞ রাজনীতিক কাস্ট ১৯৯০ সালে অগাস্টো পিনোশের স্বৈরশাসন শেষে চিলির প্রথম কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কমিউনিস্ট নেতা হারা মধ্য-বাম জোটের প্রার্থী হিসেবে নভেম্বরের প্রথম দফা ভোটে এগিয়ে ছিলেন। তবে অপরাধ দমন ও স্থবির অর্থনীতি মোকাবিলায় বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার দায় ভোটাররা তার ওপর চাপিয়ে দিতে পারেন।
৫০ বছর বয়সী খনি পরামর্শক ক্লাউদিও বেনিতেজ বলেন, ‘আগে দেশ অনেক নিরাপদ ছিল। এখন অপরাধের ধরন বদলে গেছে; জীবন পর্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’
এমন উদ্বেগের ভেতরে প্রথম দফায় ডানপন্থী প্রার্থীদের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট এনে দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয় দফায় কাস্টের জয় বড় ব্যবধানে হতে পারে।
পূর্বাভাস সত্যি হলে চিলি হবে লাতিন আমেরিকার সর্বশেষ দেশ, যেখানে ক্ষমতা বামপন্থীদের হাত থেকে ডানপন্থীদের দিকে ঝুঁকবে। এর আগে আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া ও হন্ডুরাসে এমন ঘটেছে। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাবও কিছুটা ভূমিকা রেখেছে বলে অনেকে মনে করেন।
দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ সড়ক, শক্তিশালী অর্থনীতি, প্রাণবন্ত গণতন্ত্র, স্থিতিশীল প্রতিষ্ঠান ও প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে আঞ্চলিকভাবে চিলি ছিল অনেক দেশের কাছে ঈর্ষার। কিন্তু করোনা পরবর্তীকালে আন্তঃদেশীয় অপরাধচক্রের বিস্তার দেশটিকে চাপে ফেলে।
সান্তিয়াগোর উপকণ্ঠে বসবাসকারী ৪৭ বছর বয়সী স্থপতি রাফায়েল উরজুয়া বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা দরকার। হারা এলে কিছুই বদলাবে না। কাস্ট এলে পুরো পথই বদলে যাবে।’
তবে বাস্তবতা আরো জটিল হতে পারে, কারণ ব্রাজিল, ইকুয়েডর, পেরু ও ভেনিজুয়েলা থেকে আসা বিদেশি গ্যাংয়ের প্রবাহ দেশে সহিংস অপরাধ বাড়িয়েছে। যদিও এর শুরুটা এতো বেশি মাত্রায় ছিল না।
গত এক দশকে খুনের হার বেড়েছে ১৪০ শতাংশ।
বামপন্থী প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিচের সরকার সহিংস অপরাধ হ্রাসে কিছু অগ্রগতি দেখালেও ভোটারদের বড় অংশ তা যথেষ্ট মনে করছেন না।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে বছরে ছয়টি হত্যাকাণ্ড ঘটে চিলিতে। তবে, লাতিন আমেরিকার গড় হার যেখানে ১৫,তার তুলনায় দেশটির অবস্থান এখনো অনেক নিচে।
বামপন্থী প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিচের সরকার সহিংসতা কমাতে কিছু অগ্রগতি দেখাতে পেরেছে । তবে অনেক ভোটারের চোখে তা যথেষ্ট নয়।
৫৯ বছর বয়সী কাস্ট টানা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন। অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে জনমনে থাকা উদ্বেগকে তিনি আরও জোরালো করেছেন।