ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১৮৬ বার
অর্থনীতি ডেস্ক: ডিটারজেন্ট পাউডার উৎপাদনে অন্যতম প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সোডিয়াম সালফেট। গত কয়েক বছরে দেশের বাজারে পণ্যটির চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এরই মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সোডিয়াম সালফেটের শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে স্থানীয় ডিটারজেন্ট উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, পণ্যটির শুল্ক বাড়ানোর ফলে তাদেরকে অসম প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবে। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর বাড়তি প্রভাব পড়বে। এজন্য শুল্ক না বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তারা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সোডিয়াম সালফেটের কাস্টমস শুল্ক (সিডি) ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) ছিল ১৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে কোনো সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ছিল না। কিন্তু আগামী অর্থবছরের জন্য ২০ শতাংশ এসডি প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) না থাকলেও আগামী অর্থবছরে সেটি ৩ শতাংশের প্রস্তাব করা হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে সোডিয়াম সালফেটের নামে সোডিয়াম ক্লোরাইড আমদানির কোনো সুযোগ নেই। কারণ বর্তমান সরকারের বিধিনিষেধের কারণে নানা পরীক্ষা করার পর বন্দর থেকে যেকোনো পণ্য ছাড়পত্র পায়। সোডিয়াম ক্লোরাইড ও সোডিয়াম সালফেট দুটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কেমিক্যাল। প্রয়োজনে আমদানীকৃত প্রতিটি সোডিয়াম সালফেটের চালান বাধ্যতামূলক পরীক্ষার পর ছাড়করণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যেতে পারে। তবে লবণ শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ডিটারজেন্ট শিল্পকে ধ্বংস করা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করেন তারা।
উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ডিটারজেন্ট পাউডার কোনো বিলাসী পণ্য নয়। বাংলাদেশে শতকরা ৯০ শতাংশ জনগণ পণ্যটির প্রকৃত ব্যবহারকারী। এই শ্রেণীর ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করলে পণ্যটির ওপর শুল্ক কখনই যুক্তিযুক্ত নয়। প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করলে দেশের নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত জনগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এছাড়া ডিটারজেন্ট পাউডার ইন্ডাস্ট্রিতে দেশীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি মিলিয়ে লক্ষাধিক কর্মী কাজ করেন। ফলে প্রস্তাবিত শুল্ক বাস্তবায়িত হলে এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বলছে, সোডিয়াম সালফেটের শুল্কহার বাড়ানোর কারণে বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিটারজেন্ট পাউডারের খুচরা মূল্য অনেকগুণ বেড়ে যাবে। ফলে দেশের সাধারণ মানুষকে বর্তমানের চেয়ে উচ্চমূল্যে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হবে।
এছাড়া উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, বিদেশী ডিটারজেন্টের আমদানি শুল্ক আগের মতোই আছে। ফলে দেশীয় উৎপাদিত ডিটারজেন্ট প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। উচ্চমূল্যের কারণে টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। দেশীয় ডিটারজেন্টের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বিদেশী ডিটারজেন্ট বিক্রি বেড়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশী ডিটারজেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখোমুখি হবে। রাজস্ব হারাবে সরকার।