ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৪০ বার
অর্থনীতি:- ব্যাংক থেকে নেওয়া গৃহায়ন ঋণে ১৮ মাস অর্থাৎ দেড় বছর পর্যন্ত কিস্তি না দিলেও সেটিকে খেলাপি ঋণ বলা যাবে না বলে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে ঋণ যদি তিন বছর ধরে খেলাপি থাকলে সেটাকে 'মন্দমানের' খেলাপি বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (২৬ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ ও লিজ শ্রেণিকরণ এবং সংস্থান সংরক্ষণের বিষয়ে মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে। যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে
বাংলাদেশে কার্যরত সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ, খেলাপি এবং প্রভিশন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক অধিকতর সময়োপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে। স্বল্পমেয়াদি ঋণ, লিজ ফাইন্যান্স, মেয়াদি ঋণ ও গৃহায়ন ঋণের ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে খেলাপির প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর ভিত্তিক এসব তথ্য পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায় জমা দিতে বলা হয়েছে।
মাস্টার সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১২ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধযোগ্য ঋণকে ‘স্বল্পমেয়াদি’, মেশিনারি যন্ত্রপাতি, মোটর গাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ কেনার উদ্দেশে নির্ধারিত মেয়াদ ভিত্তিক ঋণকে ‘লিজ ফাইন্যান্স’, নির্দিষ্ট শিডিউল ও মেয়াদে পরিশোধযোগ্য সকল ধরনের ঋণকে ‘মেয়াদি ঋণ’ এবং আবাসন ব্যবসার উদ্দেশে গৃহ, প্লট ও অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য ঋণকে ‘গৃহায়ন ঋণ’ নামে অভিহিত করা হয়েছে।
স্বল্পমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে তিন মাসের অধিক এবং ছয় মাসের কম সময় অপরিশোধিত ঋণকে ‘নিম্নমান’, ছয় মাসের অধিক কিন্তু নয় মাসের কম অপরিশোধিত ঋণকে ‘সন্দেহজনক’ এবং নয় মাসের অধিক সময় ধরে অপরিশোধিত স্বল্পমেয়াদি ঋণকে ‘মন্দ’ বা ক্ষতি মানের খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে।
লিজ ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে ছয় মাসের অধিক কিন্তু ১২ মাসের কম অপরিশোধিত ঋণকে ‘নিম্নমান’, ১২ মাসের অধিক কিন্তু ১৮ মাসের কম অপরিশোধিত ঋণকে ‘সন্দেহজনক’ এবং ১৮ মাসের অধিক সময় ধরে অপরিশোধিত ঋণকে ‘মন্দ’ মানের ঋণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
পাঁচ বছরের বেশি মেয়াদের গৃহায়ন ঋণের ক্ষেত্রে ১৮ মাসের অধিক কিন্তু ২৪ মাসের কম অপরিশোধিত ঋণকে ‘নিম্নমান’, ২৪ মাসের অধিক কিন্তু ৩৬ মাসের কম অপরিশোধিত ঋণকে ‘সন্দেহজনক’ এবং ৩৬ মাস বা তিন বছরের অধিক অপরিশোধিত ঋণকে ‘মন্দ’ মানের ঋণ হিসেবে বিবেচনার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়, স্বল্পমেয়াদি ঋণ, মেয়াদি ঋণ, লিজ এবং গৃহায়ন ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে কোন অনিশ্চয়তা বা সন্দেহের উদ্রেক হলে তা বস্তুগত মানদন্ডের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণযোগ্য হোক বা না হোক গুণগত মানের ভিত্তিতে উক্ত ঋণসমূহ শ্রেণিকরণ করতে হবে।
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির ফলে গ্রাহকের ঋণ চুক্তির শর্ত পরিপালনের সক্ষমতা ব্যাহত হলে অথবা বিরূপ পরিস্থিতির ফলে ঋণ গ্রহীতার মূলধন ক্ষতিগ্রস্ত হলে অথবা বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য হ্রাস পেলে অথবা অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দরুণ ঋণ আদায়ের সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পরলে উক্ত ঋণসমূহ গুণগত মানের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করতে হবে।
নিম্নমানের ঋণের জন্য ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক হলে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ও ক্ষতিজনিত ঋণ ও লিজের বিপরীতে ১০০ শতাংশ অর্থ সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলত এই সংরক্ষণের প্রক্রিয়াটি হবে শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে।