ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫০০ বার


ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা

চুলা ধরানোর জন্য ব্যবহৃত হয় গ্যাস। সেই গ্যাসের মূল্য থেকে শুরু করে সব নিত্যপণ্যই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দাম এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা।

ডিমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা দরে। বেড়েছে রান্নার পাতিলের দামও। এর ফলে বেশি কষ্টে পড়েছে নিু আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষ। পরিবারের সদস্যদের মুখে এক বেলা খাবার জোগাড় করে দেওয়াই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে সংসারের কর্তাব্যক্তির।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে আরেক দফা বেড়েছে আদা-রসুন ও সবজির দাম।

গত সপ্তাহের মতো চাল-ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা-ময়দা চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকায়। একদিন আগেও ছিল ১৭৫ টাকা। লেয়ার মুরগি ২৫০-২৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৬০ টাকা, পাকিস্তানি কক ৩৪০-৩৫০ এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।

আমদানি করা প্রতি কেজি আদা ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬৫ টাকা। প্রতি কেজি রসুন ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ৮৫ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, মিল পর্যায়ে চিনির দাম কমছে না। বরং সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে সংকট তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। মিল মালিকরা চাহিদামতো সরবরাহ করছে না। বলছে সংকট আছে। তারই প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

পাশাপাশি খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৫৮ টাকা। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬৫-৬৮ টাকা, মসুর ডাল (ছোট দানা) ১১৫ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৩৫-৩৬ টাকা, ময়দা ৪৬-৪৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কথা হয় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমানের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, পণ্যের সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে। আবার অনেকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই বাজার তদারকি বাড়িয়ে দেখতে হবে বিষয়টা আসলে কি। কি কারণে এমনটা হচ্ছে। পাশাপাশি পণ্যের সরবরাহ কম থাকলে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমাতে হবে।

রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. হানিফ যুগান্তরকে বলেন, বাজারে স্বস্তি নেই। সব পণ্যের দাম বাড়তি, কিন্তু আয় বাড়েনি। ব্যয় করতে হচ্ছে বেশি। এমন অবস্থা হচ্ছে মাস শেষে অন্যের কাছে ধার-দেনা করে চলতে হচ্ছে।

শুক্রবার খামারবাড়িতে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খাদ্যের জন্য দেশে এখন আর হাহাকার নেই। খাদ্য সংকট নেই। তবে খাবারের দাম একটু বেশি। খাদ্যে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ কিনা সেটা আমরা বলছি না। কিন্তু আমাদের দেশে খাদ্যের উৎপাদন বাড়ছে। চালের দাম একটু বেশি হলেও, চাল নিয়ে দেশে অস্থিরতা নেই।

তিনি বলেন, পণ্যের চাহিদা যদি বেশি হয় এবং সেই তুলনায় যদি সরবরাহ কম থাকে তাহলে পণ্যের দাম কিছুটা বাড়বেই। হাজার চেষ্টা করেও তখন দাম কমানো সম্ভব নয়। তারপরও আমরা সরবরাহ বৃদ্ধি এবং মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চেষ্টা করছি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে।

এদিকে ১০ অক্টোবর থেকে দেশে এলপিজির মূল্য প্রতি কেজিতে প্রায় ১৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রতি কেজি এলপিজির মূল্য আগের ৮৬ টাকা ০৭ পয়সা থেকে বেড়ে ১০৪ টাকা ৯২ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে ১২ কেজির একেকটি সিলিন্ডারের মূল্য ১০৩৩ টাকা থেকে বেড়ে ১২৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা আমেনা বেগম যুগান্তরকে বলেন, বাজারেও সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি। সেই সঙ্গে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। কারণ দাম বাড়লেও গ্যাসের ব্যবহার কমানো যাবে তা কিন্তু না। রান্নায় যতটুকু দরকার, তা ব্যবহার করতেই হবে।

অন্যদিকে রান্নার জন্য দরকারি উপকরণ পাতিলের দামও বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা নূরে আলম যুগান্তরকে বলেন, ছোট আকারের একটি পাতিল এক মাস আগে ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু এখন ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি করছি। পাশাপাশি মাঝারি আকারের পাতিল ৪০০ টাকায় বিক্রি করতাম, এখন ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া বড় আকারের পাতিলের দাম ৬৫০-৭০০ টাকা ছিল, যা এখন ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করছি।

একই বাজারে গৃহস্থালি পণ্য কিনতে আসা সাইদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিক্রেতাদের ফন্দি দেখে মন খারাপ হলেও হাসি পাচ্ছে। কারণ, মনে হচ্ছে তারা একত্রিত হয়ে খাদ্যপণ্যসহ সব পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।


   আরও সংবাদ