ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পারিবারিক ছবি, সমালোচনার মুখে মার্কিন কংগ্রেসম্যান

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৯:১৬ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৭৫ বার


আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পারিবারিক ছবি, সমালোচনার মুখে মার্কিন কংগ্রেসম্যান

যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পারিবারিক ছবি তোলার কারণে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন এক মার্কিন কংগ্রেসম্যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশটিতে বিভিন্ন সময় বন্দুক হামলায় নিহতদের স্বজনেরা এই ছবির প্রকাশে ওই কংগ্রেসম্যানের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এর আগে গত শনিবার টুইটারে পরিবারের সদস্যদের সাথে তোলা একটি ছবি টুইট করেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্য থেকে মার্কিন আইন পরিষদ কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য টমাস মেসি। ছবিতে মেসিসহ সাতজনের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিলো।

রিপাবলিকান দলীয় এই কংগ্রেসম্যান তার টুইট ক্যাপশনে লিখেন, ‘শুভ বড়দিন! বি.দ্র. সান্তা, দয়া করে কার্তুজ পাঠাও।’

ছবিতে মেসির হাতে একটি এম-৬০ মেশিনগান সাদৃশ আগ্নেয়াস্ত্র, তার স্ত্রীর হাতে একটি থমসন সাবমেশিনগান, একজনের হাতে একটি উজি সাবমেশিনগান ও বাকি চারজনের হাতে এআর-১৫ সেমি অটোমেটিক রাইফেল ছিলো।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে এম-৬০ সহ সব ভারী মেশিনগান সামরিক বাহিনী ছাড়া বেসামরিক নাগরিকদের জন্য নিষিদ্ধ। তবে বিশেষ লাইসেন্সের মাধ্যমে ১৯৮৬ সালের আগে নির্মিত ভারী মেশিনগানের অধিকারী হতে পারেন মার্কিন নাগরিকরা।

মেসি এমন সময় এই ছবি টুইট করলেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে নতুন করে স্কুলে এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহের ওই বন্দুক হামলায় চার স্কুল শিক্ষার্থী নিহত ও অপর সাতজন আহত হয়েছে।

বন্দুক হামলা চালানো ১৫ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে হামলার সাথে সংশ্লিষ্টতায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক রাখার লাইসেন্সের সহজলভ্যতার কারণে বছরের পর বছর চলে আসা সহিংতার সর্বশেষ এই ঘটনার পরপরই মার্কিন কংগ্রেসম্যানের টুইটারে এই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের লাইসেন্সের সহজলভ্যতার সমালোচনা করেন।

২০১৮ সালে ফ্লোরিডায় পার্কল্যান্ড হাইস্কুলে বন্দুক হামলায় মেয়েকে হারানো ফ্রেড গুটেনবার্গ নিজের মেয়ের ও মেয়ের কবরের ফলকের ছবি শেয়ার করে টমাস মেসিকে সংযুক্ত করে শনিবার এক টুইট করেন।

ওই টুইটে তিনি লিখেন, ‘টমাস মেসি, যেহেতু আমরা সবাই পারিবারিক ছবি শেয়ার করছি, আমিও আমরটা করছি। একটি ছবি জেমির (মেয়ে) তোলা আমার শেষ ছবি, অপরটি পার্কল্যান্ড স্কুলে বন্দুক হামলার কারণে তাকে যেখানে দাফন করা হয়েছে। মিশিগানের স্কুলে বন্দুক হামলাকারী ও তার পরিবারও আপনার মতোই একইভাবে ছবি তুলতো।’

অপরদিকে অনেকেই উগ্রবাদী সংগঠনের সাথে টমাস মেসির ছবির তুলনা করে সমালোচনা করেন।

টমাস মেসির এই ছবি তার নিজ দলের সদস্যদের কাছেও সমালোচিত হয়েছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যোগাযোগ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অ্যান্টোনি স্কারামুচি টুইট করে জানান, আগামী নির্বাচনে কেন্টাকিতে মেসির বিরুদ্ধে যেকোনো প্রার্থী খুঁজে বের করবেন।

এদিকে বন্দুকের লাইসেন্সের অধিকারপন্থী অনেক রিপাবলিকান দলীয় সদস্য মেসির এই ছবির পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।

কলোরাডো থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান লরেন বোবার্ট টুইট করেন, ‘এটি আমার মনের মতো বড়দিনের শুভেচ্ছা কার্ড।’

রিপাবলিকান দলীয় সদস্য হোসে ক্যাস্তিলো টুইট করেন, ‘এই বড়দিনে আমার চাওয়া... টমাস মেসির মতো আরো নির্বাচিত কর্মকর্তা।’

২০১২ সালে প্রথম কেন্টাকিতে নির্বাচিত হন টমাস মেসি। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার এবং বন্দুকের লাইসেন্সের ওপর যেকোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিরোধিতা করে আসছেন তিনি।

চলতি বছরের এপ্রিলে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য বয়সসীমা ২১ থেকে ১৮ বছরে কমিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে গত বছর বন্দুক হামলায় অন্তত ২০ হাজার মার্কিনি প্রাণ হারান, যা গত দুই দশকে যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি।

সূত্র : বিবিসি


   আরও সংবাদ