ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ২৩:০৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫১৯ বার
খনি শ্রমিকদের ওপর সেনার গুলি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামছে না।
মঙ্গলবার সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাগাল্যান্ডের ঘটনা নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে কার্যত সেনার গুলি চালানোর কৈফিয়ত দিয়েছেন তিনি।
অমিত শাহ বলেছেন, সেনারা খনি শ্রমিকদের গাড়ি থামাতে বলেছিল, তারা তা না থামানোয় সেনা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। কারণ, সেনার কাছে জঙ্গি কার্যকলাপের খবর ছিল। সে কারণেই কম্যান্ডোরা ওই অঞ্চলে অভিযান চালানোর জন্য পৌঁছেছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে মিলছে না নাগাল্যান্ড পুলিশের দেয়া প্রাথমিক রিপোর্ট।
প্রশ্ন উঠছে, সেনার কথা মতো যদি খনি শ্রমিকদের গাড়ি না দাঁড়াতো, তাহলে গাড়ির পেছনে গুলি করার কথা ছিল সেনার। কিন্তু বাস্তবে খনি শ্রমিকদের গাড়ির সামনে গুলি লেগেছিল। অর্থাৎ সামনে থেকে গুলি চালিয়েছিল কম্যান্ডোরা। শুধু তাই নয়, খনি শ্রমিকরা সেনার ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল বলে যে কথা সেনা সূত্রে বলা হচ্ছে, তারও কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে নাগাল্যান্ড পুলিশের দাবি।
প্রশ্ন এখানেই শেষ নয়। কম্যান্ডোরা যে গাড়ি নিয়ে নাগাল্যান্ডে গিয়েছিল, তা আসামের গাড়ি বলে জানা গেছে। সেনা আসামের গাড়িতে ভুয়া নম্বরপ্লেট লাগিয়ে সেখানে পৌঁছেছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। কেন সেনা নিজেদের গাড়ি ব্যবহার না করে, আসামের গাড়িতে ভুয়া নম্বর প্লেট লাগিয়ে সেখানে পৌঁছাল, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
নাগাল্যান্ডের নাগরিক সমাজের একাংশ দ্রুত ঘটনার তদন্তের আর্জি জানিয়েছে এবং অভিযুক্ত সেনা অফিসারদের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়েছে।
পুলিশের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ জানিয়েছেন, গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা দেখেন কম্যান্ডোরা নিহত শ্রমিকদের জামা বদলানোর চেষ্টা করছে। যদিও পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্টে এ বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই।
নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও রাজ্য থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন। একই সাথে তিন আইপিএস অফিসারকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। নাগাল্যান্ডের সবচেয়ে বড় উৎসব হর্ণবিলও মাঝপথে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু নাগাল্যান্ডে নয়, গোটা দেশেই নাগাল্যান্ডের ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিজেপি বিরোধী দলগুলিও অমিত শাহের বিবৃতি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছে। অন্যদিকে নাগাল্যান্ডের কন্যাক জনজাতি সংগঠন রাষ্ট্রপতির কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠিয়েছে। তাতে কয়েকটি দাবি করা হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। অভিযুক্ত কম্যান্ডোদের নাম প্রকাশ করতে হবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে