ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:১৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৯৯ বার
ভারত শাসিত কাশ্মির অঞ্চলের শ্রীনগরে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কাশ্মিরে ভারতীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে যাওয়া একটি বাসের ওপর সন্দেহভাজন স্বাধীনতাকামীরা ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় তিন পুলিশ সদস্য নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন।
ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোমবার শ্রীনগর শহরে একটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে বাসের ওপর তিন সন্দেহভাজন স্বাধীনতাকামী নির্বিচার গুলি চালায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং হামলার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। এখন গোটা এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে এবং হামলাকারীদের সন্ধানে তৎপরতা চলছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেন, ওই পুলিশ সদস্যরা দিনের কাজ শেষ করে যখন তাদের ক্যাম্পে ফিরছিল তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা হামলা চালালে রাতের অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে তারা জানান।
সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, ভারতীয় পুলিশের সহকারী সাব ইন্সপেক্টর গুলাম হাসান ও কনস্টেবল শফিক আলি সোমবার রাতে মারা গেছেন এবং গুরুতর আহত তৃতীয় কনস্টেবল রামিজ আহমদ বাবা মঙ্গলবার সকালে মারা যান।
ভারত শাসিত কাশ্মিরে দেশটির পুলিশ বাহিনীর ইন্সপেক্টর জেনারেল ভিজয় কুমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, জঈশ-ই-মোহাম্মদ গোষ্ঠীর একটি শাখা দল কাশ্মির টাইগারস এ হামলা চালিয়েছে বলে তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর আছে।
এ জঈশ-ই-মোহাম্মদই ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারত শাসিত কাশ্মিরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছিল। ওই হামলায় অন্তত ৪৬ ভারতীয় সৈন্য মারা যায়। এটা ছিল ওই এলাকায় ভারতীয় বাহিনীর ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী এক হামলা।
ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই কাশ্মির পুরোপুরিভাবে তাদের অংশ বলে দাবি করে থাকে, যদিও কাশ্মিরের বিভিন্ন অংশের প্রশাসনের দায়িত্ব পরমাণু শক্তিধর দু’প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তনের হাতে রয়েছে। কাশ্মির উপত্যকায় সন্দেহভাজন স্বাধীনতাকামী আন্দোলনে মদদ যোগানোর জন্য ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আভিযোগ করে আসছে। এমন অভিযোগকে পাকিস্তান বরাবরই নাকচ করেছে।
ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক দু’মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি টুইট বার্তায় এ ঘটনার জন্য তাদের শোক প্রকাশ করেছেন।
মেহবুবা মুফতি আরো বলেছেন, এ ঘটনা থেকে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে নরেন্দ্র মোদি সরকার ‘কাশ্মিরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে যে আশ্বাস দিচ্ছে তা মিথ্যা।’
ভারত-শাসিত কাশ্মিরে ১৯৮০র দশকের শেষ দিক থেকে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়। কাশ্মিরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ভারত সরকারের সাথে কাশ্মির অঞ্চলের সম্পর্কও একটা টানাপোড়েনে আছে।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুসারে কাশ্মিরকে যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসিত এলাকার মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, ২০১৯ সালে মোদি সরকার ওই মর্যাদা বাতিল করে দেয়ার পর থেকে এ সম্পর্ক এখন তলানিতে আছে।
সূত্র : বিবিসি