ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

নিরামিষভোজী কুমির!

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:০৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫০৩ বার


নিরামিষভোজী কুমির!

কুমির মাংসশাসী প্রাণী। জলে ও স্থলে সাবলীলভাবে বিচরণকারী এই প্রাণীটি সাধারণত মাছ কিংবা মাংস খেয়েই জীবন ধারণ করে। তবে ভারতের কেরালার এই কুমির মাছ কিংবা মাংস নয়, ৭০ বছর ধরে বেঁচে আছে ভাত খেয়ে!

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরালার এক মন্দিরের পাশে পুকুরে থাকে বাবিয়া নামে ওই কুমির। ওই মন্দিরে মাছ-মাংস খাওয়া বারণ। কুমির হলেও সেই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পায়নি বাবিয়া। মন্দিরের পুরোহিত নিজেই বাবিয়াকে ভাত খাওয়ান বলে জানা গেছে। 

মন্দিরের পুরোহিতের দাবি, কুমির হয়ে জন্মালেও মাছ বা মাংস নয়, বাবিয়ার প্রিয় খাবার ভাত।

একরকম ‘ভেতো’ই বলা যায় এই কুমিরকে! কারণ দুপুরে সে পেট ভরে ভাত খায়। রাতের খাবারও তাই। মেনু তেমন বদল হয় না। 

জানা গেছে, প্রতিদিন দু’বেলা এক কেজি চালের ভাত লাগে বাবিয়ার। পুকুরে অবশ্য মাছও আছে। তবে তাদের না কি সে ‘ছুঁয়েও’ দেখে না!

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাবিয়ার বয়স ৭০ বছর। বাবিয়া যে সত্যিই নিরীহ, তা প্রমাণ করতে ওই পুকুরে নেমে দিনে অন্তত দু’বার গোসল করেন বাবিয়ার ‘বন্ধু’ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত চন্দ্রশেখর।

মন্দিরে আসা ভক্তদের বাবিয়ার কাছে যাওয়ার উৎসাহও দেন তিনি। প্রধান পুরোহিতের অভয়বাণী পেয়ে বাবিয়ার কাছে যাওয়ার সাহস না পেলেও বাবিয়াকে নিয়ে উৎসাহ বেড়েছে।

নিরামিষাশী কুমিরের নাম ছড়িয়েছে দূর দূরান্তে। আজকাল শুধু বাবিয়াকে দেখতেও কেরালার এই মন্দিরে ভিড় জমান অনেকে।

কিন্তু কুমির কি সত্যিই নিরামিষাশী হয়? তার স্বাভাবিক খাবার মাংস বা মাছ না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে? তাও বছরের পর বছর! 

এ ব্যাপারে কুমির বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরী জানান, বিষয়টি কিছুটা হলেও অস্বাভাবিক। যে কুমিরটিকে নিরামিষাশী বলে বর্ণনা করা হচ্ছে, সেটি আসলে মিঠা পানির কুমির (মগর)। মাছ এদের স্বাভাবিক খাদ্য। তবে হরিণ, বন্য শূকরের মতো প্রাণীর মাংসও খায় এরা।

কুমিরের বেঁচে থাকার তাগিদ অন্যান্য জীবজন্তুর থেকে অনেক বেশি। এরা যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে। তবে বিকল্প থাকলে এরা সব সময় স্বাভাবিক খাবার বেছে নেয়। সে ক্ষেত্রে মাছ পেয়েও তা না খাওয়ার বিষয়টি কিছুটা অদ্ভুত বলে জানান অনির্বাণ। 

এ ব্যাপারে আরেক কুমির বিশেষজ্ঞ জিগর উপাধ্যায়ের বলেন, মগর সাধারণত একটু লাজুক প্রকৃতির। হয়তো দিনের বেলায় সবার সামনে মাছ খায় না। কিন্তু রাতে পুকুরের মাছ খাচ্ছে কি না তা কে দেখতে যাচ্ছে!

কিন্তু পানিতে নামার পরও পুরোহিতকে আক্রমণ না করার কি ব্যখ্যা হতে পারে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত কুমিরেরা ভাল পোষ মানে। কুকুরের থেকেও সহজে পোষ মানানো যায় তাদের। তা ছাড়া যারা এদের খাবার দেয়, তাদের সঙ্গেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কুমিরের।


   আরও সংবাদ