ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

২০২১ সালে বিশ্বের আলোচিত ১০

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৪৬ বার


২০২১ সালে বিশ্বের আলোচিত ১০

বিগত বছরের মতো ২০২১ সালেও করোনা থাবা বিস্তার করেছিল। তবে বিদায়ি বছরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যদিও নতুন ভ্যারিয়েন্টের আগমণ ঘটেছে তারপরও গত বছরের চেয়ে এ বছরটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক ছিল। মহামারি ছাড়াও চলতি বছর আরো অনেক ঘটনা আলোচনায় আসে। এরকম আলোচিত ১০টি ঘটনা নিয়ে এখানে আলোকপাত করা হলো 

১. মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে জো বাইডেন 
জো বাইডেন ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কমলা হ্যারিস দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। এবারের ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল কিছু ব্যতিক্রমী। প্রথা অনুযায়ী বিদায়ি প্রেসিডেন্ট নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পৃথকভাবে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন। যাই হোক বাইডেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অঙ্গনে ফিরতে শুরু করে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ফেরে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালের বিষয়ে আগ্রহে প্রকাশ করে বাইডেন প্রশাসন। আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার ছাড়াও ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সামরিক যুদ্ধে সহযোগিতা বন্ধ করে ওয়াশিংটন। এই পদক্ষেপ স্পষ্টতই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমেরিক ফাস্ট নীতির বিপরীত। চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিরসন না হলেও এক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গী পূর্বসূরির মতো যুদ্ধংদেহী ছিল না। কিছু কিছু মনে হয়েছে মিত্রদের আলোচনা না করেই তার প্রশাসন অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেমন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার,  কিস্টোন এক্সএল পাইপলাইন প্রকল্প বাদ দেওয়া, ভ্যাকসিনের মেধাসত্ত্ব অধিকার ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং এইউকেইউএস (অকাস) চুক্তি। 

২. জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সুখবর ছিল না
জাতিসংঘ মহাসচিব অন্তেনিও গুতেরাঁ সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বহু দেশই কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করেনি। ৯ আগস্ট জাতিসংঘের উদ্যোগে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে গুতেরাঁ বলেন, মানব সৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তন নাজুক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে কার্বন নির্গমনের রাশ টেনে ধরার কোনো বিকল্প  নেই। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা বোঝার জন্য ৪ হাজার পৃষ্ঠার এই রিপোর্ট পুরোটা পড়ার কারো দরকার হবে না। ২০২১ সালে চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার খবরগুলো মাঝে মধ্যে সংবাদ শিরোনাম হয়। আমেরিকা দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে তীব্র খরা, বেলজিয়াম ও জার্মানিতে বন্যা ও গ্রিসে ব্যাপক দাবানল যার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। এছাড়া এ বছর নেপাল ও ভারতেও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বন্যা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৫ নভেম্বর ৫০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তন বিলে সই করেন। যদিওবা তিনি তেলের দাম নিম্নমুখী রাখার জন্য বেশি করে তেল উত্পাদন করার জন্য ওপেকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

৩. তালেবান ফের ক্ষমতায়
আফগানিস্তানে ১৫ আগস্ট আশরাফ গনি সরকারের পতনের পর তালেবান ক্ষমতায় আসে। তালেবানের এই জয়কে প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তান স্বাগত জানায়। তবে বিষয়টি অন্য প্রতিবেশীদেশগুলোকে নতুন করে ভাবিয়ে তোলে। এর আগে ১৯৯০-এর দশকে তালেবান ক্ষমতায় থাকাকালে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ায়ে হামলার এক মাস পর ৭ অক্টোবর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী দেশটিকে সামরিক আক্রমণ শুরু করে। এর ধাক্কায় দুয়েক মাসের মধ্যেই তালেবানের পতন ঘটে। এরপর বহুজাতিক বাহিনীর দেশটিতে দীর্ঘ সময় অবস্থানকালে তারা পাকিস্তানের সহযোগিতার ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল ছিল। সেদেশ থেকে মার্কিন সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর তালেবান ক্ষমতায় আসবে এটা অনেকটাই অনুমিত ছিল। তবে ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটে যাবে সেটা ধারণা করা যায়নি। দেশটিতে দুই দশকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে। সরকারি হিসেবে আড়াই হাজারের বেশি মার্কিন সৈন্য ও প্রায় ৪ হাজার মার্কিন বেসামরিক লোক নিহত হন। অন্যদিকে আফগানিস্তানে ১ লাখ ৭০ হাজারের ওপর প্রাণহানি ঘটে।

৪. অকাস নিয়ে বিতর্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ১৫ সেপ্টেম্বর এইউকেইউএস (অকাস) চুক্তির কথা জানান। অকাস গঠন নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব বাধে। বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তিটি করে। এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল দেশ তিনটি উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময় এবং চীনকে প্রতিরোধ করা। এই অংশিদারিত্বের ফলে অস্ট্রেলিয়া প্রথমবারের মতো পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরিতে সক্ষম হওয়ার পথে এগিয়ে যায়। চুক্তির মধ্যে আরো ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম টেকনোলজি ও সাইবার নিরাপক্তার মতো বিষয়গুলো। চীনকে মোকাবেলা করতে নেওয়া উদ্যোগটি শুরুতেই সমালোচনার মুখে পড়ে। পরমাণু শক্তিধর এবং ইউরোপীয়  ইউনিয়নের ফ্রান্স চুক্তির সমালোচনা করে বলে এর মাধ্যমে তাদের ‘পিঠে ছুরি মারা  হয়েছে। প্যারিসের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়। এসব কারণে দেশে বাইডেনের জনপ্রিয়তা কিছুটা পড়ে যায়। ধারণা হচ্ছে ২০২২ সালে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে মূল্য গুনতে হতে পারে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে।

৫. নতুন রূপে করোনা
চলতি বছর করোনা ভাইরাস বিদায় না নিলে অনেকটা স্মিত হয়ে পড়ে বলে অনুমান করা হয়। তবে এর নতুন রূপ বা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্ববাসীর কপালে নতুন করে ভাঁজ ফেলে। এর আগে হাম, পোলিও বা ম্যালেরিয়ার টিকা উদ্ভাবন করতে অনেক বছর সময় লেগেছিল। করোনার টিকা আসতে এত সময় না নিলেও নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট এর কার্যকারিতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে। করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ৮৯টি দেশে শনাক্ত হয়। এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের থেকেও দ্রুততার সঙ্গে ছড়ায়। সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হার উদ্বেগ ছড়িয়ে দেয় ইউরোপ এবং আমেরিকায়। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শক বিজ্ঞানীরা বলেন, বিস্তার ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে হাসপাতালগুলো বিশাল চাপের মুখে পড়বে। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওমিক্রন এখন ইউরোপে বিদ্যুত্ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে ইউরোপের দেশগুলো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। ২০২১ সালের প্রথম ১১ মাস পর্যন্ত ১৮৪টি দেশের ৭৪০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়। তবে তারপরও বহু মানুষ টিকার বাইরে থেকে যায়। ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব জুড়ে মোট মৃতের সংখ্য প্রায় ৫৫ লাখে দাঁড়ায়।

৬. সৌদি-কাতার সম্পর্কের বরফ গলে
বছরের শুরুর দিকে কাতারের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পথে এগিয়ে আসে সৌদি আরব। ৫ জানুয়ারি সীমান্ত উন্মুক্ত করার পর সেখানে কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব অবসানের লক্ষ্যে একটি চুক্তিও হয়। কাতার সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করে এমন অভিযোগ করে তিন বছর আগে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিশর কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। কাতার তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে এবং এই দেশগুলো যেসব দাবি করে কাতার সেগুলোও প্রত্যাখ্যান করে। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করা এবং দোহাভিত্তিক আলজাজিরা নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া। ২০১৭ সালের জুনে চার প্রতিবেশী দেশের আরোপ করা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে কাতার অবরোধ হিসেবে বর্ণনা করে। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সমস্যা সমাধানের জন্য সৌদি আরবের ওপর চাপ দিয়ে যায় বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

৭. মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান
মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটি বিক্ষোভে উত্তাল থাকে। নিয়মিতই কোনো না কোনো শহরে বিক্ষোভ হয়। ১ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত এবং ৩ হাজার লোক আটক হয়। যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধা“া দেয়। বহির্বিশ্ব থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে মিয়ানমার। এসব কিছুর পরও নমনীয় হয়নি সামরিক জান্তা। ৯ এপ্রিল প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণা করে বলে আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচিত সরকারের কাছে এটি করা হবে। জান্তা সরকার ৬ ডিসেম্বর সাবেক স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে চার বছর কারাদণ্ড দেয়। সু চি বর্তমানে অ“াত স্থানে আটক আছেন। জান্তার বিরুদ্ধে জনগণকে উসকানি দেওয়া ও করোনা ভাইরাস বিধি লঙ্ঘনের দায়ে তার অনুপস্থিতিতে এ দণ্ড দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নের মুখে এর বিরুদ্ধে সরব হওয়ার বদলে সু চি কার্যত সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেন। এর ফলে তিনি দেশে বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হন।

৮. অভিবাসী সংকট—ধনী দেশের জন্য পরীক্ষা
ক্যারিবীয় অঞ্চল বিশেষ করে হাইতি ও হন্ডুরাসের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রমুখী হয় হাজার হাজার মানুষ। স্থলপথে পায়ে হেঁটেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মেক্সিকো সীমান্তে পৌঁছায়। কিন্তু বাধসাধে মেক্সিকোর ন্যাশনাল গার্ড। কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপেও অভিবাসী সংকট এ বছর নতুন মাত্রা যোগ করে। করোনা মাহমারি, বেলারুশে রাজনৈতিক সংকট ও আফগানিস্তানে তালেবানের প্রত্যাবর্তন প্লিমা দেশগুলোর জন্য অভিবাসীর চাপ বাড়ায়। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ১৭ লাখ মানুষ ঢোকে, ১৯৬০ সালের পর এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা। বলা বাহুল্য বাইডেন প্রশাসন অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের চেয়ে অনেক অনুকূল মনোভাব প্রকাশ করে। অন্যদিকে ইইউতে গত বছরের তুলনায় এবার ৭০ শতাংশ বেশি অভিবাসী গেছে। এদের একটি বড় অংশ ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গেছে। বিষয়টি নিয়ে লন্ডন ও প্যারিসের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বও তৈরি হয়। চলতি বছর যারা অভিবাসী হয়েছে তাদের ৮৪ শতাংশই নিজ ভিটা থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষ।

৯. ইরানের পরমাণু কর্মসূচি
ইরানের সঙ্গে ইতিপূর্বে করা স্থগিত হয়ে যাওয়া পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর সম্ভবনা তৈরি হয়েছে এ বছর। এই আলোচনার জন্য তারিখ নির্ধারণের পরপরই ইরান জানায়, তারা ২৫ কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে যার প্রায় ৬০ শতাংশই বিশুদ্ধ। এই পরিমাণটি পরমাণু বোমা তৈরির জন্য যতটুকু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন তার প্রায় কাছাকাছি। যদিও তেহরান জোর দিয়ে বলে এগুলো শান্তিপূর্ণ  উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, তারপরও বিশেষ“রা বলেন, এর আগে এই ধরনের উচ্চ ক্ষমতাসমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম শুধুমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর কাছেই ছিল। এদিকে বিষয়টি নিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের নতুন টানাপোড়েন বাধে। ইসরাইল দাবি করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য উপযুক্ত উপাদান তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে যা অতীতে ছিল না। বিষয়টি ইসরাইলের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা সংস্থা অনুমান করে, ইরান যদি চায় তাহলে এটি এখন এক মাসের মধ্যে একটি পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সংস্থান করতে পারে। এদিকে আঞ্চলিক মিত্রদের নিয়ে সামরিক মহড়া জোরদার করে ইসরাইল। লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যৌথ মহড়া দেয় ইসরাইল, আমিরাত এবং বাহরাইনের নৌবাহিনী।

১০. গাজায় ইসরাইলি হামলা
চলতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা ও ইসরাইল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে। অস্ত্রবিরতি হলেও সংকট কাটছে না এখনই। মে মাসের ১০ তারিখ থেকে ২১ তরিখ পর্যন্ত চলে ইসরাইলের সামরিক হামলা। ২১ মে ভোররাতে উভয়পক্ষের মধ্যে অস্ত্রবিরতি হয়। ঘটনার শুরু জেরুজালেমের শহরতলী এলাকা শেখ জাররাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে। লড়াই শুধু যে গাজা আর ইসরাইলের অ—গু কিছু জায়গায় সীমাবদ্ধ ছিল তা নয়। সংঘাত ছড়িয়ে গেছে ইসরাইলের ভেতরেও। সেখানে ইহুদি ও আরবদের সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা যায়। ইসরাইলের শহর লদে একটি ব্যস্ত সড়কে সেদেশের আরব নাগরিকদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইহুদির পাথর ছুড়তে দেখা গেছে। এই আরবরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি একাত্মতা জানিয়েছিল। এর আগে সেখানে আরবদের হাতে এক বন্দুকধারী ইহুদি নিহত হয়। ইসরাইলের আরব নাগরিকরা ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করে এবং ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ে হামলা করে। লদ ছাড়া ইসরাইলের রামলে, আক্রে, নাজারেথ, হাইফা ও বন্দরনগরী জাফা থেকেও আরব ও ইহুদিদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। 

সূত্র : ইত্তেফাক


   আরও সংবাদ