ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০২২ ২০:৫২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪০০ বার
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৬ ডিসেম্বর। সম্মেলনের তারিখ ঘনিয়ে আসায় শেষ মুহূর্তে শীর্ষপদে আসতে দৌড়ঝাঁপ করছেন অর্ধশতাধিক নেতা। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্লিন ইমেজ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এবং ত্যাগী নেতাদের বিবেচনায় রাখছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। মাঠের আলোচনায় ও ইতিবাচক রাজনীতির কারণে এগিয়ে আছেন অন্তত দুই ডজন নেতা।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে সম্মেলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে বাছাই করার কথা বলা হলেও ছাত্রলীগের ‘সর্বোচ্চ অভিভাবক’ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতেই মূলত শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাই করা হয়। সে হিসাবে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী যে দুইজনকে চূরান্তভাবে নির্বাচিত করবে তারাই আসবে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুইটি পদে।
এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের তারিখ তিনবার পরিবর্তন হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর থাকায় তার নির্দেশে সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিএনপির ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সম্মেলনের তারিখ এগিয়ে এনে আগামী ৬ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পরপরই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। তারা নিয়ম করে ধরনা দিচ্ছেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকের কাছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন অনেকেই। আর পদপ্রত্যাশীদের প্রধান উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে নাম পৌঁছানো।এতদিন ছাত্রলীগ নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও শেষ মুহূর্তে তাদের আনাগোনা বেড়েছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে।
শীর্ষ পদের আলোচনায় যারা : ছাত্রলীগের বিগত কয়েকটি কমিটি শীর্ষ নেতৃত্বের নির্বাচনের প্রক্রিয়া, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা এবং গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অঞ্চলভিত্তিক যেসব পদপ্রত্যাশী এগিয়ে আছেন তারা হলেন-
উত্তরাঞ্চল থেকে এ বছর আলোচনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক সহ-সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেন। এ ছাড়াও আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সদস্য রাকিবুল হাসান রাকিব, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু।
বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত।
চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত।
বরিশাল অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, উপ-কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয় ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেনও আলোচনায় আছেন শীর্ষ নেতৃত্বের দৌড়ে।
বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহীন আলোচনায় আছেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস ও সহ-সম্পাদক এসএম রাকিব সিরাজী।
নারীদের মধ্যে যারা এগিয়ে
ছাত্রলীগের নারী সদস্যদের মধ্যে এগিয়ে আছেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি, ডাকসু সদস্য ও সুফিয়া কামাল হলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কুয়েত মৈত্রী হলের সাবেক সভাপতি ফরিদা পারভীন।
সার্বিক বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, বয়সের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবেন। তবে যাদের দক্ষতা আছে, ম্যাচিউরড এবং পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের তাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হবে।