ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০৮:২২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৪৬ বার
গত ১১ এপ্রিল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ একটি মাদক মামলার আসামিকে খালাস দিয়েছেন। খালাসের রায়ে আদালত বলেছেন, আসামি মো. শাহীনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২১টি তারিখ অতিবাহিত হওয়ার পর মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়ে আসে। সাক্ষীদের প্রতি জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করা হয়। তার পরও রাষ্ট্রপক্ষ দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে কোনো সাক্ষীকেই আদালতে হাজির করতে পারেনি। এই মামলার আসামি ২০১০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে ৫ দিন হাজতবাস করেন। সে জামিনে মুক্তির পর আজ পর্যন্ত নিয়মিত হাজিরা দাখিল করে আসছে। প্রতিটি ধার্য তারিখে আসামিদের প্রতি জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করা হচ্ছে।
আদালত রায়ে বলেন, এতে প্রতীয়মান, সাক্ষীদের হাজির করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপক্ষ দীর্ঘ সময় কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি এবং আনীত অভিযোগ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট সুযোগ পেয়েও তা ব্যবহার করতে রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মামলাটি পরিচালনায় প্রসিকিউশন পক্ষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই মামলায় আরও অগ্রসর হওয়া আদালতের কালক্ষেপণ ও সরকারি অর্থের অপচয় বৈ আর কোনো সুফল আসবে না মর্মে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়। আদালত উচ্চ আদালতের নজির তুলে ধরে রায়ে বলেছেন, এই মামলার আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৬৫ এইচ ধারার বিধানমতে খালাস প্রদান করে মামলাটি নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
শুধু এ মামলাটিই নয়, গত ডিসেম্বর থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এই আদালত ১২১টি পুরোনো মাদক মামলার রায় দিয়েছেন। এর মধ্যে ২২টিতে সাজা দিয়েছেন এই আদালতের বিচারক জেসমিন আরা বেগম। বাকি ৯৯টি মামলার আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত ৯৯টির মধ্যে ৭৫টি মামলার একজন সাক্ষীও হাজির করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। সাক্ষী হাজির করতে না পারার কারণে খারিজ হয়ে যাওয়া মামলাগুলোর রায়ে আদালত একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। প্রতিটি মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই ১০ থেকে ১২ বছরের পুরোনো। এ ছাড়া দুই থেকে তিন বোতল ফেনসিডিল ও মদ, সামান্য কয়েক পিস ইয়াবাসহ ছোটখাটো মাদক মামলা। স্বাভাবিক বিচার হলেও এসব মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ ৬ মাসের সাজা হওয়ার কথা; কিন্তু এসব মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারির পরও রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় মামলাগুলোর বিচার করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিনেও সাক্ষী হাজির করতে না পারায় সময় ও অর্থ অপচয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত এসব মামলা খারিজ করে আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।