ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

‘দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়ের বিয়ে দেবেন না’

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ ১২:২২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮০ বার


‘দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়ের বিয়ে দেবেন না’

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলার ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের দুই ধারায় আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভুঁইয়া এ রায় ঘোষণা করেন। তবে তাকে চার বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। এরই মধ্যে তার সাড়ে তিন বছরের সাজা খাটা শেষ হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। তাই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়ের বিয়ে দেবেন না। দাওয়াত দিলে যাবেন না। জেনেশুনে কারোর দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া। দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

এদিন কারাগারে আটক আসামি সেলিমকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারায় চার বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের সাজা দেওয়া হয়। এ ছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ১২(৪) ধারায় চার বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ নিয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে হওয়া চার মামলার মধ্যে প্রথম কোনো মামলার রায় হলো। তার বিরুদ্ধে বৈদেশিক মুদ্রা আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এ ছাড়া সিআইডির মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপর মামলাটি অধিকতর তদন্তধীন। এ তিন মামলায় সেলিম প্রধান জামিনে রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধান র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। ওই বছরের ২৭ অক্টোবর দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। এই উপপরিচালকই মামলাটি তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পান। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো খেলে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো খেলে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে। সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এই টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা। ২০১১ সালে মুনাফা করে ১ কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৮ কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন, এ-সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।


   আরও সংবাদ