ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:২১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৮ বার
চাঁদপুর: আকবর হোসেন, সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয় সে।
এখন অর্থাভাবে এ শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে পারছে না।
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের দিন মজুর প্রতিবন্ধী রওশন আলীর ছেলে আকবর। তার মা গৃহিণী ফেরদৌসী বেগম।
৪ আগস্ট সিলেটে কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। তখন বুক, পিঠ ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে আকবরের।
সেদিনই তাকে সিলেটের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও অর্থাভাবে এখন তার চিকিৎসা আটকে গেছে। গুলির ক্ষত নিয়ে বাড়িতে বিছানায় পড়ে আছে আকবর। পঙ্গু বাবা ছেলের চিকিৎসা না করাতে পেরে হতাশায় পড়েছেন।
আহত আকবর হোসেনের বাবা রওশন আলী বলেন, ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে তার ছেলে বুক, পিঠ ও হাতে গুলি লাগে। শরীরজুড়ে ছররা গুলির ক্ষতচিহ্ন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় কিছু চিকিৎসা করালেও পুরো সুস্থ করে তুলতে পারেননি।
আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত সিংহভাগ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করলেও আমার বেলায় তা জোটেনি।
কাঁদতে কাতে রওশন আলী বলেন, আমি এক সময় প্রবাসে ছিলাম। সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে দিনমুজুরি করে পরিবার নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছি। এখন আবার ছেলের এ অবস্থা। ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় মেটাতে গিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমাকে।
আকবর হোসেনের মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, আমি গৃহিণী। ছেলে আমার মেধাবী। নিজ সন্তানের শরীর থেকে ছররা গুলির ছোট ছোট কার্তুজ উঠিয়েছি। সেগুলো আমার কাছে রয়েছে। ছেলের সুস্থতা ও সুন্দর ভবিষ্যৎই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চাওয়া। এখন খুব অভাব-অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করতে হচ্ছে আমাদের।
আহত আকবর হোসেন বলেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৭ জুলাই থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলাম। প্রথমে হালকা আঘাত পেলেও ৪ আগস্ট পুলিশের ছররা গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হই। প্রথমে আমাকে সিলেট সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সে বলেছে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলেও এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। জীবনে কিছু পাই বা না পাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং থাকব। কেননা আমিও একজন ছাত্র। আমার কর্মসংস্থান হলে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব।