স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:১৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১ বার
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ১নং সাপাহার ইউনিয়নে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় সবগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে একটি চলমান এবং একটি কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর), কাবিখা, কাবিটা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে গৃহীত কয়েক ডজন প্রকল্পের প্রায় শতভাগ বাস্তবায়নের ফলে বদলে গেছে ইউনিয়নটির সার্বিক চিত্র। দীর্ঘদিনের কাঁচা রাস্তাগুলো এখন ইটের সোলিং ও সিসি ঢালাইয়ে রূপ নেয়ায় এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটায় সাধারণ মানুষের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর ২০২৫) সরেজমিনে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও পরিষদ সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে টিআর কর্মসূচীর আওতায় সাপাহার প্রফেসরপাড়া জলি ম্যাডামের বাড়ি হতে নজরুলের বাড়ি এবং পুরাতন সাপাহার স্যাটেলাইট স্কুল সংলগ্ন রাস্তাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মসজিদ, পিছলডাঙ্গা ও সরফতুল্লা মাদ্রাসার সংস্কার কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় মানিকুড়া, নুরপুর, বাসুলডাঙ্গা, গাঞ্জাকুড়ি ও ধর্মপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কর্দমাক্ত রাস্তাগুলোতে ইটের সোলিং বিছানো হয়েছে। সাহাবাজপুর তিনমাথা মোড় ব্রীজের গাইড ওয়াল নির্মাণ ও বিভিন্ন স্থানে ইউড্রেন স্থাপনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে আমূল পরিবর্তন।
বিশেষ করে ইউপির নিজস্ব অর্থায়নে সাপাহার পোস্ট অফিস চত্বরের ড্রেনেজ সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং প্রফেসরপাড়া ও উত্তর তুলশিপাড়ার রাস্তা সংস্কার এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে।
প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সাপাহার আমডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ময়না খাতুন বলেন, “বৃষ্টির দিনে আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটু সমান কাদা হতো। চলাচলের খুব কষ্ট ছিল। মেম্বার-চেয়ারম্যান সাহেব রাস্তাটি করে দেয়ায় এখন আমরা শান্তিতে চলাচল করতে পারছি। আমাদের ভোগান্তি শেষ হয়েছে।”
সাপাহার গোডাউনপাড়া গ্রামের তহমিনা বেগম বলেন, “আগে এই রাস্তায় কোনো ভ্যান-রিকশা আসতে চাইত না। রাস্তাটি সংস্কার হওয়ার পর এখন খুব সহজেই ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে এবং আমরা প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে যেতে পারছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তা এবং ড্রেন করে দেওযায় এলাকার চেহারাটাই এখন সুন্দর হয়ে গেছে।”
প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, “আমরা জনগণের প্রতিনিধি, কোথায় কি কি প্রয়োজন তা মাথায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করেছি। প্রতিটি কাজের মান নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত তদারকি করেছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সুষ্ঠুভাবে সব কাজ শেষ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে ১নং সাপাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম বলেন, “২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে আমরা সরকারি বরাদ্দ ও নিজস্ব তহবিলের প্রতিটি পয়সা জনগণের কল্যাণে ব্যয় করেছি। টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও নিজস্ব অর্থায়নের প্রতিটি প্রকল্প স্বচ্ছতার সাথে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অবহেলিত জনপদগুলোকে শহরের সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনাই ছিল আমাদের লক্ষ্য, যা আজ দৃশ্যমান।”
ইউনিয়নবাসীর প্রত্যাশা, উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে সাপাহার ১নং ইউনিয়ন খুব শীঘ্রই উপজেলার একটি মডেল ইউনিয়নে পরিণত হবে।