ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

কে হচ্ছেন নতুন প্রধান বিচারপতি?

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:০০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৬ বার


কে হচ্ছেন নতুন প্রধান বিচারপতি?

ঢাকা: সাতষট্টি বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় সংবিধান অনুসারে অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আগামী ২৭ ডিসেম্বর তার কর্মজীবনের শেষ দিন। 

তার আগে ১৪ ডিসেম্বর বিদায়ী অভিভাষণ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তবে ২৭ ডিসেম্বর অবকাশকালীন ছুটি থাকায় তার বিচারিক জীবনের ইতি ঘটবে ১৮ ডিসেম্বর। এই অবস্থায় আলোচিত হচ্ছে নতুন বিচারপতি নিয়ে। কে হচ্ছেন দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি?

দেশের তিন অঙ্গের এক অঙ্গ ‘বিচার বিভাগ’-এর সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। আর এই প্রধান বিচারপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হন।

সাধারণত আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। কিন্তু বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি থাকা অবস্থায় গত বছরের ১০ আগস্ট নিয়োগ পান।

বর্তমানে আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

সংবিধানে কী আছে?
বিচারক-নিয়োগ নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ (১) অুনচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।

বিচারকদের পদের মেয়াদ নিয়ে সংবিধানের ৯৬ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে কোনো বিচারক সাতষট্টি বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।

সংবিধান সংস্কার কমিশন
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের বিচারকদের মধ্য থেকে মেয়াদের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতম বিচারককে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ প্রদানের সুপারিশ করছে।’

বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের কর্মে প্রবীণতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করিবেন।’ 

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম
বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত ও ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। 

পরবর্তীতে ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ২০২৬ সালের ১৪ জুলাই অবসরে যাবেন।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলম ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে যুক্তরাজ্য থেকেও আন্তর্জাতিক আইনে এলএলএম ডিগ্রি নেন। ১৯৮৫ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি জুবায়ের হমান চৌধুরী ২০২৮ সালের ১৭ মে অবসরে যাবেন।

বিচারপতি মো. রেজাউল হক
বিচারপতি মো. রেজাউল হক এম এ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৮ সালে জেলা আদালতে ও ১৯৯০ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি মো. রেজাউল হক ২০২৭ সালের ২৩ এপ্রিল অবসরে যাবে।

বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক
বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৯০ সালে তিনি জেলা আদালতে ও ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পরে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ২০৩০ সালের ৬ নভেম্বর অবসরে যাবেন।

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট এবং ২০০১ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে এবং দুই বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ২০২৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরে যাবেন।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯২ সালে জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট এবং ২০০২ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে এবং দুই বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ২০৩৩ সালের ২৬ মে অবসারে  যাবেন।


   আরও সংবাদ