ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

পীরগঞ্জে কৃষি জমিতে স্থাপিত ইট ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠখড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫১২ বার


পীরগঞ্জে কৃষি জমিতে স্থাপিত ইট ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠখড়ি

বখতিয়ার রহমান,পীরগঞ্জ (রংপুর) ঃ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বেশীর ভাগ ইট ভাটায় ইট পোড়ানো অধ্যাদেশ আইন উপেক্ষা করে ইট পোড়ানো অব্যাহত রয়েছে । অথচ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এখনও এ ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেননি । আর এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকার কৃষক সহ সচেতন মহল । তারা দেশের পরিবেশ রক্ষার্থে জরুরী এ পরিস্থিতির অবসান চায় ।

সুত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জে বর্তমানে ৫২টির মত ইট ভাটা রয়েছে । ভাটা গুলির বেশীর ভাগেরই নেই কোন বৈধ লাইসেন্স । তার পরেও প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে আবাসিক ও বনায়ন এলাকায় কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে এ সব ইট ভাটা । ভাটা গুলিতে ইট তৈরীর ক্ষেতে ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির টপ সোয়েল এবং জ¦ালানী হিসেবে নির্বিগ্নে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ খড়ি ।

গত শুক্রবার উপজেলার ঝরার ঘাট,কাঞ্চনপুর, ঝরারঘাট,দানেশনগর, মাদারগঞ্জ, ডাষাড়পাড়া সহ ক’টি ইট ভাটা এলাকা ঘুরে ভাটার শ্রমিক ও সাধারন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাটা গুলিতে প্রতি দিবারাতে শত শত মন কাঠ খড়ি পোড়ানো হচ্ছে । পুর্ব থেকে ভাটা মালিকেরা তাদের ভাটার অনতিদুরে নিজস্ব স্থানে কিংবা পাশর্^বর্তী স-মিলে এ কাঠ গুলো স্তুপ করে রেখেছেন । ভাটা গুলিতে নাম মাত্র যে কয়লার অস্থিত্ব থাকে দিনের বেলায় তা কিছুটা পোড়ানো হলেও রাতে বন্ধ থাকে । সন্ধার পর থেকে বিভিন্ন যানবাহনে স-মিল কিংবা বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রাখা কাঠ খড়ি ভাটায় এনে সারা রাত্রী ধরে পোড়ানো হচ্ছে । এ ক্ষেত্রে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন ভাটা মালিক তাদের একই প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অন্য সব ভাট্য়া যদি কাঠখড়ি পোড়ানো হয় তাহলে আমার ভাটায় পুড়তে সমস্যা কোথায় ?

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রংপুর এর এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পীরগঞ্জের ৪টি ইট ভাটা মালিকের ৮ লাখ টাকা জরিমান করা সহ ক’টি ইট ভাটার আংশিক স্থাপনা ধবংশ করা হয় ।

এদিকে চলতি সনের জানুয়ারীর শেষ সপ্তাহে ঢাকাস্থ পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রোজিনা আক্তার এর নেতৃত্বে সর্বশেষ ক’টি ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয় । তাহাকে সহযোগীতা করেন রংপুরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আফরিন জাহান, পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর এর উপ-পরিচালক মেজ-বাবুল আলম, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস । এ সময় ক’টি ইট ভাটা মালিকের জরিমানা ও ক’টি ভাটা অচল করে দেয়া হলেও সে ভাটা গুলো সচল করে অবৈধ ভাবে ইট পোড়ানো চলছেই । এর পর আর কোন অভিযান পরিচালিত হয়নি ।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিরোদা রানী রায়ের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,বিষয়টি নিয়ে আমিও উদ্বিগ্ন । এ বিষয়ে আমি একাই কোন পদক্ষেপে যেতে পারি না, কারন ভাটা সেক্টরের সাথে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, কাস্টমস, শ্রম অধিদপ্তর সহ আরও দু-একটি মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে হলে এ সকল দপ্তরের সমন্বয়ে পদক্ষেপে যেতে হয়।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর এর উপ-পরিচালক মেজ-বাবুল-আলম এর সঙ্গে সোমবার মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইট ভাটায় অভিযান একটা চলমান প্রক্রিয়া ,সুবিধা জনক সময়ে পীরগঞ্জের ইটভাটায় আবারও অভিযান চালানো হবে ।


   আরও সংবাদ