ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এখন...

নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৬৬ বার


ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এখন...

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে সম্রাটের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। সেখানেই সারাদিন বিছানায় শুয়ে-বসে দিন কাটছে একসময়ের প্রভাবশালী এই নেতার। অসুস্থ থাকায় মামলার শুনানিতেও হাজির হতে পারছেন না। এতে বিলম্বিত হচ্ছে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর বিচারকাজ।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানায়, নানা ধরনের রোগে ভুগছেন সম্রাট। ১৯৯৮ সালে তার শরীরে একটি পেশমেকার লাগানো হয়। সেটার মেয়াদ ছিল ১৫ বছর। ২০১৩ সালে ওই পেশমেকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও কিডনি, হার্ট, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা ধরনের অসুখ নিয়ে বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে বন্দী রয়েছেন তিনি।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘সম্রাট বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের প্রিজন সেলে রয়েছেন। তিনি নানা ধরনের সমস্যায় ভুগছেন।’ পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া সম্রাট হাসপাতালেই থাকবেন বলে জানান তিনি।

ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়।

প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে আরও দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। পরে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও দুর্নীতির মামলাও হয়।

কোন মামলার কী অবস্থা

সম্রাটের বিরুদ্ধে দায়ের করা পাঁচটি মামলার মধ্যে তিনটিতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অস্ত্র ও মাদক মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে র‌্যাব। দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায়ও চার্জশিট দেয়া হয়। সিআইডির করা অর্থ পাচারের মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। এছাড়াও বন্য প্রাণীর চামড়া রাখার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সম্রাটকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

অস্ত্র ও মাদক মামলায় সম্রাট ও তার সহযোগী যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনর শুনানি পিছিয়েছে। সম্রাট অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকার কারণে শুনানি পেছানো হয়।

মাদক মামলায় ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। অভিযোগপত্রে বলা হয়, যুবলীগ নেতা সম্রাট জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তার সহযোগী আরমানের সহযোগিতায় তিনি মাদকদ্রব্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মাদকদ্রব্যের কোনো বৈধ কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

ঢাকার দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাব পরিচালনা করতেন সম্রাট। তার নিয়ন্ত্রণেই এসব ক্লাবে ক্যাসিনোসহ জুয়ার আসর বসত। এভাবে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হন এই প্রভাবশালী নেতা। প্রতি মাসে ক্যাসিনো খেলার জন্য সিঙ্গাপুরেও যেতেন তিনি। সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতেন। তার সহযোগী ছিলেন কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ এবং যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।


   আরও সংবাদ