ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

কোটচাঁদপুরের ফসল রক্ষায় নেপিয়ার ঘাষ দিয়ে বেড়া দিচ্ছেন কৃষকরা!

স্টাফ রিপোর্টার


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৭১ বার


কোটচাঁদপুরের ফসল রক্ষায় নেপিয়ার ঘাষ দিয়ে বেড়া দিচ্ছেন কৃষকরা!

স্টাফ রিপোর্টার- বাবু মন্ডল নামে এক কৃষক ১৬ শতক জমিতে পেয়ারার চাষ করেছিলেন। এই পেয়ারার চারা রোপনের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেতের আইলে নেপিয়ার ঘাষের চারাও রোপন করেন। উভয় চারা বড় হতে থাকে। ঘাষের গাছগুলো দেড় থেকে দুই ফুট উচু হলে বাঁশের চটা দিয়ে বেঁধে দেন তিনি। এভাবে এই ঘাষ হয়ে যায় ফসল রক্ষার বেড়া। আর ক্ষেতের মধ্যে থাকা পেয়ারার চারাও নিরাপদে বড় হয়ে ওঠে। কৃষক বাবু মন্ডল জানান, পেয়ারা গাছ থেকে পেয়ারা বিক্রি করে যেমন পয়সা পেয়েছেন তেমনই আইলে থাকা ঘাষও বিক্রি করেছেন।

কিছু ঘাষ বাড়িতে থাকা গরু-ছাগলের খাবার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এখনও তার ক্ষেতের আইলে এই ঘাষ রয়েছে। আগামীতে ওই জমিতে ঝাল গাছ লাগাবেন। ঝাল বিক্রির পাশাপাশি ঘাষও বিক্রি করবেন বলে আশা রয়েছে তার। বাবু মন্ডল একা নন, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ফসল রক্ষায় বেড়া হিসেবে নেপিয়ার ঘাষ বেছে নিয়েছেন। মাঠের পর মাঠ এই ঘাষ লাগিয়ে তা দিয়ে বেড়া তৈরী করে ফসলের ক্ষেত ঘেরা হয়েছে।

এতে ফসলের ক্ষেতের মধ্যে সহজে কেউ প্রবেশ করতে পারছে না। গরু-ছাগলও প্রবেশ করতে পারবে না। কৃষি বিভাগও বলছেন এটা খুবই ভালো খবর। সরেজমিনে কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষিকুন্ডু, বলুহর, ফুলবাড়ি, এলাঙ্গী গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় অসংখ্য ক্ষেত এই বেড়া দিয়ে ফসল রক্ষা করা হচ্ছে। ঘাষের বেড়ার মধ্যে নানা ধরনের সবজির চাষ করা হয়েছে। লক্ষিকুন্ডু গ্রামের মাঠে কথা হয় কৃষক বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, কোটচাঁদপুর এলাকায় এই নেপিয়ার ঘাষের চাষ হচ্ছে প্রায় ১৫/১৬ বছর।

প্রথমে ফুলবাড়ি এলাকায় এই চাষ শুরু হয়। বর্তমানে গোটা উপজেলার সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের এলাকাতেও ব্যাপক ভাবে এই ঘাষের চাষ হচ্ছে। সাব্দালপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, একবিঘা জমিতে এই নেপিয়ার ঘাষের চাষ করলে বছরে তিন দফায় কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকার ঘাষ বিক্রি করা যায়। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী চলতি বছর কোটচাঁদপুর উপজেলায় প্রায় ১৩ শত বিঘা জমিতে এই ঘাষের চাষ হচ্ছে। বলুহর গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে কুল এর চাষ করেছেন।

সেই জমিতে ঘাষ দিয়ে বেড়া দিয়েছেন। কুল ও ঘাষ বিক্রি করে টাকা পেয়েছেন। কৃষক সামাউল ইসলাম জানান, প্রথমে ২/১ জন কৃষক জমির আইলে এই ঘাষ রোপন করেছিলেন। এখন অনেক কৃষক এই বেড়া তৈরীতে ঝুকে পড়ছেন। এখন মাঠের পর মাঠ এই ঘাষের বেড়া দেখা যায়। কৃষকরা মনে করেন এটা তাদের উদ্ভাবন, যা দিয়ে ক্ষেত রক্ষার পশাপাশি পশু খাদ্যের চাহিদা পুরন করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো মহাসিন আলী জানান, ঘাষ দিয়ে বেড়া তৈরী করছেন কৃষকরা এটা তারা দেখেছেন। এটা অবশ্যই ভালো একটা কাজ। কৃষক এতে লাভবান হচ্ছেন। ক্ষেতের ফসল রক্ষার পাশাপাশি কৃষকরা জমির আইল থেকে পশুখাদ্য পেয়ে যাচ্ছেন।


   আরও সংবাদ