ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৬৮ বার
সম্প্রতি বাজারে কেজি দরে তরমুজ বিক্রির অভিযোগে জরিমানা গুণতে হয়েছে অনেক ফল বিক্রেতাকে। তরমুজ ক্ষেত থেকে পিস হিসাবে কিনে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা কেন কেজি দরে বিক্রি করবেন—এ নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। দিনাজপুর শহরের নিউ মার্কেট আড়তের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, ক্ষেত থেকে তারা তরমুজ পরিমাপ (মণ হিসাবে) অনুমান করেই কিনে থাকেন। বাজারে নিয়ে আসতে অনেক খরচ হয় এবং কেজি দরে বিক্রি করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে; তাই তারা তরমুজ কেজিতে বিক্রি করে থাকেন।
দিনাজপুর শহরের নিউ মার্কেটের ফল আড়ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে তিন ধরনের তরমুজ আছে। একেবারে কালো রঙের যে তরমুজ, তার নাম ‘জেসমিন’। এই তরমুজ বর্তমানে বাজারে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আর যে তরমুজটি সবুজ এবং সাদা রঙের, সেটিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন ‘দিনাজপুরের লোকাল’ তরমুজ। বর্তমান বাজারে এই তরমুজ মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। অন্যদিকে ডোরাকাটা সবুজ রঙের তরমুজের নাম ‘বাংলালিংক তরমুজ’। এর দাম বাজারে ‘জেসমিন’ প্রজাতির তরমুজের মতোই।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আড়তে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরমুজ বিক্রেতারা পিস প্রতি কিনে এনে তা কমিশন এজেন্টদের আড়তে মজুত রাখছেন। আড়ত মালিকদের দোকান থেকে খুচরা ও পাইকার বিক্রেতারা তা মণ হিসেবে কিনে ক্রেতাদের কাছে কেজি দরে বিক্রি করছেন।
বর্তমান বাজারে খুচরা ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। আরমান আলী নামে একজন ক্রেতা বলেন, ‘আমি বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছি। চার কেজি ৭শ’ গ্রাম তরমুজ কিনলাম। দাম হলো ১৮৮ টাকা। দোকানি ৮ টাকা কম নিলেন।’ তরমুজ ক্রেতা এমদাদ হক বলেন, ‘আমি একটি তরমুজ কিনেছি ৪০ টাকা কেজি দরে। পিস দরে তরমুজ চাইলে বিক্রেতা বলেছেন, ভাই আমিও তো কেজি দরেই কিনেছি। আপনাকে পিস দরে দেবো কীভাবে?’
খুলনা কদমতলা থেকে ট্রাক বোঝাই তরমুজ নিয়ে দিনাজপুর আড়তে এসেছেন ব্যবসায়ী সিরাজউদ্দিন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের চাষিদের কাছে তরমুজ কেনা লাগে ক্ষেত চুক্তি। ধরা যাক, একজন চাষির তরমুজ ক্ষেত আছে তিন হতে চার বিঘা। তার জমির তরমুজ দেখে আমাকে নির্ধারণ করতে হবে কতটুকু তরমুজ আছে। সেই জমিতে ছোট, বড়, মাঝারি তরমুজ থাকে। সেই তরমুজ আমাদের বাজারে আনতে অনেক খরচ হয়। তাতে করে যদি আমি পিস দরে বিক্রি করতে যাই, তবে লোকসানের দিকে যাবে। তারা (চাষিরা) আমার মতো ব্যবসায়ীদের কাছে পিস দরে বিক্রি করবে না। ওদের কাছ থেকে ছোট, বড় গড় করেই কিনতে হবে। আর তাছাড়া চাষিদের কাছে পিস দরে কিনে কেজি দরে বিক্রি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমাদের সুবিধা হয়। আর আমি যদি কেজি দরে কিনে কেজি দরে বিক্রি করি তবে সুবিধা হয় না, তাতে বরং লোকসানই হয়।’