ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

গাছেই ফেটে যাচ্ছে লিচু, চিন্তায় চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১৮৪ বার


গাছেই ফেটে যাচ্ছে লিচু, চিন্তায় চাষিরা

অপরাধ ডেস্ক: পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর, জয়নগর, মিরকামারি, চর-মিরকামারি, মানিকনগর, বাবুল চড়া, কাঠালবাড়িয়া, চর গড়গড়ি, দাদাপুর, পাকুরিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে গ্রামের পর গ্রাম এখন লিচু আবাদ হচ্ছে। কামালপুর, চরকুড়ুলিয়ার মতো বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেও খুব দ্রুত গড়ে উঠছে লিচুপল্লী। এ অঞ্চলের বেলে-দোআঁশ মাটি ও আবহাওয়া লিচু চাষের জন্য খুব উপযোগী।

ফলন ভালো ও গুণে-মানে সেরা হওয়ায় ঈশ্বরদীর লিচুর কদরও সারাদেশে। বরাবর ভালো দাম পাওয়ায় লিচুচাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। এসব এলাকার সড়ক বা মহাসড়ক ধরে গেলে রাস্তার দু’পাশে চোখে পড়ে শুধু লিচু লিচু। কিন্তু এবার দৃশ্যপট ভিন্ন। এবার লিচুগাছে শুধু শুধু পাতা আর পাতা। পাতার ফাঁকে উঁকি মারছে দু’চারটি লিচু।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাত্র ২০ ভাগ গাছে এবার মুকুল এসেছিল। আর বেশিরভাগ গাছই ছিল মুকুলশূন্য। প্রতিবছরের মতো এবারও গাছের পরিচর্যা করেছেন কিন্তু পর্যাপ্ত মুকুল না আসায় চিন্তার শেষ নেই তাদের। মুকুল না আসায় বিশেষ করে বোম্বাই জাতের লিচুর ফলন লক্ষ্যমাত্রার এক-পঞ্চমাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ না ওঠায় চাষিরা লোকসানে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এবারে ঈশ্বরদীতে লিচু ফলনে বিপর্যয় ঘটেছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, এবছর হঠাৎ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে লিচুগাছে কাঙিক্ষত মুকুল আসেনি। ফলনও হবে অনেক কম। এতে সারাদেশের লিচুর জোগানেও ঘাটতি হবে। কারণ সারাদেশের লিচুর চাহিদার একটি বড় জোগান আসে এখান থেকে। তবে এবার যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তাতে উৎপাদন খরচ না ওঠায় চাষিদের লোকসানে পড়তে।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর, মানিকনগর, জয়নগর, মিরকামারি, আওতাপাড়া, বাঁশেরবাধা, সদর উপজেলার চকউগ্রগড়, জোয়ারদহ, হামিদপুর, জয়কৃষ্ণপুর, উগ্রগড়, মৌগ্রাম, আটঘরিয়া উপজেলার গোপালপুর, ত্রিমোহন, পরানপুর, হিদাশকোল, চাচকিয়া, ষাটগাছা, ডেঙ্গারগ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়বে সারি সারি এমন লিচুর বাগান। এবছর শুধুমাত্র ঈশ্বরদীতে তিন হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০ হাজার মেট্টিক টন। প্রতিবছর ৫ থেকে ৬শ’ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হয় এখানে। প্রতিবছর লিচুর বাম্পার ফলন হলেও এবার দেখা দিয়েছে বিপরীত চিত্র। গাছগুলোতে দেখা মিলছে না পর্যাপ্ত মুকুল। এতে ফলনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে।

লিচুচাষিরা বলছেন, এ বছর প্রাকৃতিক কারণে প্রায় ৫ ভাগের ৪ ভাগ গাছে মুকুলই ছিল না। গাছে মুকুল আসার পর গুঁটি তৈরির সময় বিপর্যয় দেখা দেয়। পরবর্তীতে দাবদাহ এবং খরার কবলে পড়ে লিচুগাছ। লিচুর গায়ে কালো ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়। লিচু পরিপক্ক হওয়ার পর অনেক লিচু ফেটে যাচ্ছে।


   আরও সংবাদ