নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৫৮ বার
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ৬ নং শিরন্টী ইউনিয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার (ভিজিএফ) এর সুফলভোগীর তালিকা প্রস্তুত ও সহায়তার টাকা বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য অনুসন্ধনে জানাগেছে , উপজেলার ৬ নং শিরন্টী ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডের সভাপতি ও সেক্রেটারীগণের স্বাক্ষরিত ২শ’ জন সুবিধাভোগীর একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দেয়া হয়। সরকার দলীয় ওয়ার্ড সভাপতি ও সেক্রেটারী দেয়া ওই তালিকা গুলোতে বেশির ভাগ সুবিধাভোগী রয়েছেন যারা কিনা বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সহায়তা ভোগ করেন। তালিকা ভুক্তদের মধ্যে কেউবা সরকারী বা বে-সরকারী চাকুরীজিবী। আবার আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকার পরেও কোন কোন পরিবারে থেকে ৩/৪ জনকে ভিজিএফ তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে। সরকারি প্রজ্ঞাপনের প্রতি তোয়াক্কা না করে দলীয় নেতাদের দেয়া মনগড়া ভিজিএফ তালিকাগুলোর আলোকে পর্যায় ক্রমে প্রতি ওয়ার্ডে অর্থ বিতরণ কার্যক্রম চালয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ধরনের তালিকায় একই ব্যক্তি একাধীক সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহন করছে। অপর দিকে ওই ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে বেশ কিছু সংক্ষক প্রকৃত অসহায় লোকজন এবারের ঈদে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া আর্থীক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন এ ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। এ দিকে উল্লেখিত বিষয়ে অনুসন্ধানকালে জানা গেছে শিরন্টি ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হানিফ ও সেক্রেটারী আলফাজ উদ্দীনের স্বাক্ষরিত একটি তালিকা ওই ওয়ার্ডের তালিকায় সংযুক্ত করে তা চুড়ান্ত হিসেবে নিয়ে বিতরণ কার্য সম্পুর্ন করা হয়েছে। ওই তালিকায় দেখা গেছে সোনাডাঙ্গা গ্রামের জনৈক শিক্ষকের পরিবার থেকে তার দুই ছেলে ও স্ত্রীর নাম অর্ন্তভুক্ত করে ভিজিএফ’র টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে খোঁজ নিলে দেখা যাবে দলীয় নেতাগণের দেয়া তালিকায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ভিজিডি,রেশন কার্ডধারী সহ সরকারী বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের নাম রয়েছে। দলীয় নেতাদের দেয়া এ ধরনের তালিকা গুলো সংশ্লিষ্ট মেম্বার চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের উপর চাপিয়ে দেয়ার ফলে সরকারী প্রজ্ঞাপন নীতিমালা লঙ্ঘিত হচ্ছে ।
বিষয়টি নিয়ে শিরন্টী ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল বাকীর সাথে কথা হলে তিনি জানান,আমি সরকারী প্রজ্ঞাপন নীতি মালা অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডের ভিজিএফ তালিকা তৈরী করে ছিলাম। পরবর্তি সময়ে ওয়ার্ড পর্যায়ের দলীয় নেতাদের তৈরীকৃত নাম তালিকা গুলো জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয়। এখানে আমাদের কোন দোষ নেই । ওই তালিকাগুলো দলীয় লোকজন করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহাজান হোসেন মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এখানে যা কিছু করনীয় তা দলীয় লোকজনের কোন এখতিয়ার নেই। এটা প্রস্তত করবে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানগন।
বিষয়টি নিয়ে শিরন্টী ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসার অসীম কুমার সাহা বলেন, “ আমার দায়িত্ব তালিকা দেখে সুফলভোগীর হাতে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া। সুতরাং আমি আমার যা দায়িত্ব সেটাই পালন করছি।”
এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ভিজিএফ’র তালিকা তৈরীর জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে বাছাই কমিটি রয়েছে। সেখানে সরকারী কর্মকর্তা সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গন এ কাজ পরিচালনা করেন। দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারের দেয়া প্রত্যায়নের পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সমুহে ভিজিএফ বিতরণ করা হয়। যদি ভিজিএফ তালিকা তৈরী ও বিতরনে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।