ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৯৪৯ বার
নিজস্ব প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন মাঠে অন্তত দশ দিন আগে ধান পেকে গেলেও ধান কাটা-মাড়াই করে ঘরে তুলতে পারেনি চাষিরা। এখনও অর্ধেক ধান রয়ে গেছে মাঠে। শ্রমিক সংকটে চাষিরা তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে সরকার কৃষকদের প্রণোদনাস্বরূপ কম্বাইন্ড হারভেস্ট মেশিন প্রদান করলেও সেগুলোর দেখা মিলছে না। ফলে মহাচিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এদিকে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে অনেক এলাকার ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
জানা গেছে উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে সাত হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। বৈশাখের মধ্যবর্তী সময় থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত চলে ধান কাটা-মাড়াই। ধান রোপণ ও কর্তনের সময়টা একেবারই কম হওয়ায় দেখা দেয় শ্রমিক সংকট। শ্রমিক সংকট কাটিয়ে সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তুলতে প্রণোদনা হিসেবে জেলায় ৩২টি কম্বাইন্ড হারভেস্ট মেশিন দেওয়া হয় চাষিদের। শর্তারোপ করা হয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় কাজ করতে পারবে। অথচ মেশিনগুলো জেলার কৃষকদের কাজে না লাগিয়ে অন্য জেলায় ভাড়া খাটাচ্ছে। ফলে সুযোগ বুঝে দ্বিগুণ পারিশ্রমিক চেয়ে বসছেন শ্রমিকরা। কালবৈশাখীর তাণ্ডব ছাড়াও সপ্তাহজুড়ে মেঘলা আবহাওয়ায় মাঠে ধান রেখে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
ভাটপাড়া গ্রামের বোরো ধানচাষি এরশাদ আলী বলেন, আমি দু’বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি কাটাই খরচ দু’হাজার টাকা, বিচালি বাঁধায় ১২শ’ টাকা, মাড়াই এক হাজার ও পরিবহণ খরচ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬০০ টাকা। রোপণ ও সেচ খরচ এবং সার কীটনাশক বাবদ যে খরচ হয়েছে তা পরিশোধ করে বোরো আবাদ লোকসানে পরিণত হচ্ছে। তবুও নিজের খাদ্য সংগ্রহের জন্য প্রতি বছর আবাদ করতে হয়। কাটাই-মাড়াইয়ের সময় শ্রমিক সংকট দেখা দিলে আমাদের লেজে-গোবওে অবস্থা হয়ে যায়। ভর্তুকির হারভেস্ট মেশিন যদি নিজ জেলায় খাটানোর নির্দেশ থকত তবে বোরো আবাদে কৃষকরা টিকে থাকবে নচেৎ এ আবাদে আগ্রহ হারাবে।
গাংনীর কুঞ্জনগরের বোরো চাষি মজনুর রহমানের দাবি বর্তমানে দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ধান কেটে কয়েকদিন মাঠে রেখে এসেছি। আজো ঘরে তুলতে পারিনি। পরিবারের এক বছরের খাবার মাঠে পড়ে থাকায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তবে কম্বাইন্ড হারভেস্ট মেশিনগুলো নিজ নিজ এলাকায় কাজ করার নির্দেশনা থাকলে স্থানীয় কৃষকরা উপকৃত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, মেহেরপুরে সময় সময় শ্রমিক সংকট হয়ে পড়ে। শ্রমিকদের দ্বিগুণ মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যায় না কৃষকদের অভিযোগ সত্য, কিন্তু যারা কৃষক তারাই শ্রমিক। কিছু কিছু সময় শ্রমিকরাই সুযোগ বুঝে অধিক পারিশ্রমিক নিয়ে আবাদিদের বিপদে ফেলেন। প্রণোদনার হারভেস্ট মেশিন কোথায় কাজ করবে তার কোনো দিকনির্দেশনা নেই। তবে আমরা নিজ নিজ এলাকায় কাজ করার অনুরোধ করতে পারি।