ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭২৮ বার
অর্থনীতি ডেস্ক: ২০২০ সালের শুরুর দিকে দেশে করোনার মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে স্থবির হয়ে আছে পর্যটন খাত। তারকা মানের হোটেলগুলো লোকসানে রয়েছে। দুই বছরে কমপক্ষে ১৬ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে দাবি এই খাতের সংশ্লিষ্টদের। তারা বলছেন, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে হোটেলগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চাকরিরত কর্মীরাও বেকার হয়ে পড়বেন। এ অবস্থায় গত একবছরের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন হোটল মালিকরা।
জানা গেছে, দেশের তারকা মানের হোটেলগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন (বিহা) প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে ৪ দফা দাবি জানিয়ে আবেদন করেছে।
সোমবার (৩১ মে) বিহা’র প্রেসিডেন্ট এইচ এম হাকীম আলীর সই করা আবেদন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে— ১. সব তারকা মানের হোটেলগুলোর গত একবছরের ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ, ২. বিদ্যমান ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ, ৩. বিদ্যমান ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের কিস্তির সময়সীমা বাড়ানো এবং ৪. দুই বছরের জন্য সহজশর্তে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী ঋণ।
সারা বিশ্বের মতো করোনায় দেশের পর্যটন খাত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদেশি অতিথি না থাকায় তারকা মানের হোটেলগুলো গত দেড়বছর ধরে প্রায় অতিথি শূন্য। বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিহা ১৬ দফা প্রস্তাব দিয়েছিল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে। তবে সংগঠনটির দাবি— তাদের সেই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হয়নি।
হোটেল মালিকরা বলছেন, করোনার আঘাত সামলে ২০২০ সালের শেষের দিকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হয়। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সেই চেষ্টাকে আবারও স্থবির করে দিয়েছে। পর্যটন খাতের এ মন্দা আরও পাঁচ বছর থাকবে বলে শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
গেলো বছর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় দুই বছরের জন্য সহজ শর্তে ঋণের সুবিধা চেয়েও পাননি হোটেল মালিকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় বিদেশি অতিথি আসছেন না। দেশি-বিদেশি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানও আয়োজন হচ্ছে না তারকা হোটেলগুলোতে। অথচ হোটেলে অতিথি না থাকলেও বিদ্যুৎসহ ইউটিলিটি বিল, রক্ষণাবেক্ষণ, কর্মচারীদের বেতন, ব্যাংক ঋণ দিতে হচ্ছে নিয়মিতই।
অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারায় বাড়ছে ব্যাংক সুদ। অনেক প্রতিষ্ঠান বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছে। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে। এ অবস্থায় ঋণের আসল টাকাই পরিশোধ করা কঠিন। যদি সুদের ওপর সুদ আরোপ করা হয়, তাহলে হোটেল মালিকদের পক্ষে ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিহা’র প্রেসিডেন্ট এইচ এম হাকীম আলী বলেন, ‘পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হওয়ার পথে। বিশ্বের অনেক দেশ পর্যটন খাতে সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ খাতটি অবহেলিত। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ খাতের কর্মসংস্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বেতন দিতে না পেরে অনেকে কর্মচারী কমাচ্ছেন। এই সংকট থেকে উত্তরণে সরকার উদ্যোগ না নিলে এ খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা এজন্যই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। আশা করি, তিনি কোনও সমাধান দেবেন।’