ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৬৯ বার
আইন আদালত: ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য উৎপাদন করা ক্যাপসুলের মধ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অবস্থিত বেসরকারি ওষুধ কোম্পানি হামিম ইউনানি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নীলা আক্তার নামে ওই কোম্পানির এক কর্মচারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। গতকাল দুপুরে উল্লাপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসাআই) গাজীউল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে মামলার পর কোম্পানিটি বন্ধ করে দিয়ে মামলার আসামিরা সবাই পলাতক বলে জানা গেছে। মামলার আসামিরা হলেন হামিম ইউনানি ল্যাবরেটরিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল গণি মন্ডল (৫৮), হেকিম মো. আলামিন (৪০), ম্যানেজার মো. আজিম (৩৫), পরীক্ষক মো. মাসুম (৩৬), মেশিন অপারেটর শিবলী মন্ডল (৩৭), সহকারী ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর (৪৫), মো. সুমন মন্ডল (৪০) ও কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক রোজিনা বেগম।
মামলায় বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার উল্লাপাড়া পৌর এলাকায় অবস্থিত হামিম ইউনানি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাইজিক কেয়ার ক্যাপসুল নামে একটি নতুন ওষুধ উৎপাদন করছে। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা ছাড়াই এ ওষুধের স্যাম্পল কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টরের নির্দেশে হেকিম আলামিন কর্মচারী নীলাকে দেন এবং ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বিতরণ ও প্রয়োগ করে ফলাফল জানানোর নির্দেশ দেন।
বাদী উৎপাদিত ওই ওষুধ নিয়ে তার স্বামী ডায়াবেটিস রোগী নাজমুল হুদা ও শ্বশুর আসাব আলীকে সেবন করান। সেবনের কিছু সময় পরই তার স্বামী ও শ্বশুর উভয়েই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ৪৮ ঘণ্টা চিকিৎসকের নিবিড় পরিচর্যায় জ্ঞান ফিরে পান তারা।
পরীক্ষা করে তাদের শরীরে প্রাণঘাতী ডিএম, এইচটিএন, হারবাল পয়জন শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় নীলা আক্তার বাদী হয়ে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ম্যানেজিং ডিরেক্টরসহ ঊর্ধ্বতন আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীউল হক জানান, মামলা হওয়ার পর বর্তমানে কোম্পানিটি বন্ধ রেখে আসামিরা পলাতক। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।
জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহসান হাবীব জানান, হামিম ইউনানি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের অন্যান্য ওষুধের অনুমোদন রয়েছে। নতুন উৎপাদিত ওই ওষুধ ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা ছাড়া কাউকে সেবন করতে দেয়ার বিধান নেই। যেহেতু এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। কোম্পানির বিরুদ্ধে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।