ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৪৭ বার
আইন আদালত: চিত্রনায়িকা পরীমনির ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা চলমান। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এ মামলায় ওই দুই আসামির রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে তাদের আইনজীবী রাত ১২টার পর পরীমনির ক্লাবে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই সঙ্গে পরীমনি সেলিব্রেটি তকমা গায়ে মেখে অন্যদের ভিকটিমাইজড করেছেন বলেও আদালতকে জানান বিবাদী পক্ষের আইনজীবী।
বুধবার ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানার মামলার রিমান্ড শুনানি হয়। বুধবার শুনানি শেষে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসান।
পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার ইন্সপেক্টর মো. কামাল হোসেন তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ হেমায়েত হোসেন রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, এজাহারে এ দুজনের নাম আছে। ঘটনার সঙ্গে আরও অজ্ঞাতনামারা জড়িত আছেন। তাদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। আর আসামিরা এ অপরাধ থেকে মুক্তি পেলে সমাজে এ ধরনের অপরাধ আরও বেড়ে যাবে। সমাজকে এ ধরনের অপরাধ থেকে মুক্ত করতে তাদের বিচার হওয়া জরুরি।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী বলেন, পরীমনি স্বনামধন্য সেলিব্রেটি। আক্রমণ করার মূল উদ্দেশ্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করা। ইন্ডাস্ট্রিতে পরীমনির ভবিষ্যৎ ধূলিস্মাৎ করে দিছে।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পরীমনি বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির একজন অভিনেত্রী। আসামিরা তাকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরীমনিকে মদ্যপানের চেষ্টা করিয়ে পরবর্তীতে ধর্ষণসহ আরও বড় কোনো ক্ষতি করার পরিকল্পনা ছিল কিনা- তা জানার জন্য এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ একান্ত জরুরি।
এর পর নাসির উদ্দিন ও অমির পক্ষে ঢাকা বারের সভাপতি আব্দুল বাতেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুনসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানি করেন।
শুনানিতে মিজানুর রহমান মামুন বলেন, বিষয়টা হলো— ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কথা খাই না এমন। সেলিব্রেটি হলেই আমাকে রাত ১২টার পর ক্লাবে যেতে হবে কেন? এ রকম হলে তো আরও অনেক কিছুই হতে পারে। ধর্ষণ বা হত্যাচেষ্টার মামলা হলে তো ডিএনএ, ফরেনসিক টেস্ট করা দরকার। তা ছাড়া আজ যারা আসামি তারা কি কম সেলিব্রেটি। পরীমনি সেলিব্রেটি ভালো কথা, উনার জায়গায় উনি থাকুন। আমাদের বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা পুরোপুরি মিডিয়া ট্রায়াল। এর রেজাল্ট কি হবে আমরা জানি। ’
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে বনানীর একটি ক্লাবে গিয়ে ভাঙচুর করেছেন পরীমনি। সেলিব্রেটি হয়ে অন্যদের ভিকটিমাইজড করছেন তিনি। নাসির উদ্দিন এবং অমিও ভিকটিমাইজড।
আবদুল বাতেন বলেন, পরীমনি বাসা থেকে রওনা দিয়েছেন স্বেচ্ছায়। ১২টার পর তো বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যায়। আর নাসির কেন তাকে রেপ করতে যাবেন। এজাহারে অমির বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য নেই। কেন তাকে রিমান্ডে পাঠাবেন।
তিনি বলেন, শাবানা, ববিতা, রোজিনাও নায়িকা ছিলেন। তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি। তারা কোনো ক্লাবে যাননি। তিনি কেন রাত ১২টার পর ক্লাবে যাবেন। আসামিরা ভালো মানুষ। বিপদে পড়ে গেছেন। হয়রানি করতে মামলা দেওয়া হয়েছে। রিমান্ড বাতিল চেয়ে তাদের জামিন চাচ্ছি।
দুপক্ষের শুনানি শেষে নাসির উদ্দিন বলেন, আমার বয়স ৬৫। অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছি। গত ৯ দিন ডিবির রিমান্ডে ছিলাম। এখন আবার আমাকে রিমান্ডে পাঠানো হলে মনে হয় না আর বাঁচব।
এর পর আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।