ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬০১ বার
দক্ষিণ আফ্রিকার কাওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে জ্যাকব জুমার বাড়ির কাছেই একটি কারাগারে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার ও ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। আদালত অবমাননার দায়ে তার ১৫ মাসের সাজা হয়েছে। সেই সাজা খাটতেই বুধবার আত্মসমর্পণ করলেন জ্যাকব জুমা।
২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল (নয় বছর) পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের পদে আসীন ছিলেন জ্যাকব জুমা। ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রের অর্থ লোপাট ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশেষ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে নিয়মবহির্ভূতভাবে হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
অবশ্য ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে গেছেন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য ছিল- দেশের বিরোধীপক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
সম্প্রতি জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার আদালতে দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২৯ জুন তাকে আদালতে তলব করা হয়েছিল, কিন্তু সেদিন আদালতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন জ্যাকব জুমা। স্বাভাবিকভাবেই তখন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমননার অভিযোগ আসে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার সাজা ঘোষণাসহ অবিলম্বে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
তবে গত রোববার আত্মসমর্পণে আপত্তি জানান জ্যাকব জুমা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, তার এখন তার যে বয়স, তাতে বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে এই সাজা ঘোষণা করে তাকে একরকম মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। জুমার বক্তব্যের জেরে পরবর্তী আদেশে আদালত বলেন, ০৭ জুলাই বুধবার রাত ১২ টার মধ্যে যদি তিনি আত্মসমর্পণ না করেন, সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেফতার করা হবে। এর পরই আত্মসমর্পণ করলেন জুমা।
আত্মসমর্পণের আগে বুধবার জ্যাকব জুমার ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জুমা আদালতের আদেশ মেনে নিয়ে কারাবাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মেয়ে দুদু জুমা-সাম্বুদলা টুইটে বলেন, বাবা কারাগারের পথে যাত্রা করেছেন। তিনি বেশ উজ্জীবিত রয়েছেন।
বিবিসির দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিনিধি নোমসা মাসেকো জানিয়েছেন, জুমাকে গ্রেফতারে বুধবার সকাল থেকেই তার বাসভবনের আশপাশে সশস্ত্র কর্মকর্তা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল।
পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল এর মধ্যে বাসভবনের ভেতরে জুমার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা আলোচনাও করেন । তারপর মধ্যরাতের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগে একটি গাড়ি বহরকে দ্রুত জুমার বাসভবন ত্যাগ করতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে এই বহরের কোনো একটি গাড়িতে জুমা ছিলেন।
পদত্যাগের মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালে তার প্রায় ৯ বছরের শাসনামলের অবসান ঘটে। জুমার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, তিনি রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাট করেছেন এবং ব্যবসায়ীদের রাজনীতিতে নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছেন। বিশেষ করে জুমার আশকারাতেই ‘গুপ্ত পরিবার’ নামে একটি ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্যবসায়ী পরিবার দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনীতিতে বেপরোয়া হস্তক্ষেপ করেছে।