নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৭৩ বার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ করেনা মহামারি লকডাউনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা খাদ্য গুদাম থেকে নিম্ন মানের চাল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পচা চাল নিম্ন আয়ের কর্মহীন মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। বাড়ি নিয়ে দেখছেন চাল পচা, খাওয়ার অনুপযোগী। শৈলকুপা ওয়াপদা গেটের চা বিক্রেতা কোর্টপাড়ার বাসিন্দা খোরশেদ আলম বাবলু। লকডাউনে নিম্ন আয়ের ঘরবন্দীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে গত বুধবারে উপজেলা প্রশাসন থেকে পেয়েছেন ১০ কেজি চাল ও দুইশ টাকা। চাল পাওয়ার পর তিনি বাড়ি নিয়ে দেখেন নষ্ট ও খুবই নিম্নমানের চাল দেওয়া হয়েছে।
ওই চাল বাড়ির কবুতরও খাচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। শৈলকুপা শহরের পশু হাসপাতাল রোডের দাস পাড়ার বাসিন্দা বিষু অভিযোগ করেন, তাকেও নষ্ট চাল দেওয়া হয়েছে। অভাবে পড়ে নষ্ট চালের ভাত খেতে হচ্ছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপায় চা বিক্রেতা ও সেলুন কর্মীদের মধ্যে সরকারী চাল ও নগদ টাকা বিতরন করা হয়। ওই দিন ৬শ’ নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে চাল বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা। নষ্ট চাল বিতরণের পর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলেও গুদাম কর্মকর্তা রয়েছেন বহাল তবিয়তে।
তবে শৈলকুপা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ আল রিপন জানান, গত মাসে হরিনাকুন্ড উপজেলা গুদাম থেকে দুই’শ টন চাল এসেছিল। তার মধ্যে দু’ পাঁচ বস্তা নিম্নমানের চাল থাকতে পারে। এ ঘটনায় হরিণাকুন্ডুর ওসিএলএসডি সেলিম রেজাকে প্রত্যাহার করা হয় বলেও তিনি জানান। এই পচা ও নষ্ট চাল রিসিভ করলেন কেন এমন প্রশ্নের কোন জবাব শৈলকুপার ওসিএলএসডি রিপন দিতে পারেন নি। ঘুষের বিনিময়ে এমন চাল কেনার নজীর রয়েছে সরকারী খাদ্যগুদামগুলোতে।
বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা জানান, সরকারী ভাবে যে চাল বিতরন করা হয় তা সরকারী খাদ্য গুদাম থেকে আসে। তিনিও এমন অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান। পরে খোঁজ নিয়ে দেখেন ৩০/৪০ বস্তা এমন চাল এসেছিল। বাকী চাল বিতরন তিনি বন্ধ করে দেন। গুদাম থেকে দেওয়ার সময় দেখে দেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে যারা এমন নিম্নমানের চাল পেয়েছেন তাদের পূনরায় চাল দেওয়া হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান।
লকডাউনে নিম্ন মানের চাল বিতরনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঝিনাইদহ জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারস সম্পাদক স্বপন কুমার বাগচী। তিনি বলেন, যে সব কর্মকর্তা এমন নিম্ন মানের চাল সরকারী গুদামে ক্রয় করেন, তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারে নষ্ট চাল দিয়ে প্রকারান্তরে সরকারের ভাবমূর্থী নষ্ট করা হয়েছে বলে মনে করেন।