ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭২৬ বার
আইন আদালত: ২০০৬ সালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়ার স্বপন কুমার বিশ্বাসকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে কনডেম সেল থেকে নরমাল সেলে স্থানান্তর করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে
মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তার করা জেল আপিল খারিজ করে সোমবার (১২ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একই বেঞ্চে এ আপিলের ওপর শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করা হয়।
২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর স্বপনের বাড়িওয়ালার স্ত্রীর দেয়া অভিযোগ মতে, নীলফামারীর সৈয়দপুরের নয়াটোলায় মোফাজ্জলের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন স্বপন কুমার বিশ্বাস। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার চড়াইকোলের নন্দলালপুরে। পিতার নাম শংকর কুমার বিশ্বাস।
২০০৫ সালের দিকে সৈয়দপুরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার দীনবন্ধুর মেয়ে আলপনা রায়কে বিয়ে করে নয়াটোলায় ভাড়া থাকতেন স্বপন। চাকরি করতেন নীলফামারীতে একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে। ২০০৬ সালের ১৬ অক্টোবর রাজবাড়ীর পাংশা থানার পুরাতন পাংশা বাজারের সুকুমার ঘোষের মেয়ে স্বপ্না রানী ঘোষ সৈয়দপুরে স্বপনের ভাড়াবাড়িতে আসেন।
জিজ্ঞাসাবাদে স্বপনের প্রথম স্ত্রী বলে জানান স্বপ্না। এ কথা জানার পর দ্বিতীয় স্ত্রী দুপুরে তার বাবার বাড়ি চলে যান। রাতে প্রথম স্ত্রী স্বপ্নার সঙ্গে ঝগড়াঝাটি হয় স্বপনের। অভিযোগে বাড়িওয়ালার স্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘ভোর ৫টায় স্বপনের চিৎকারে গিয়ে দেখি স্বপ্না ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে।’
প্রথমে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও পরে পুলিশ হত্যার অভিযোগ আনে এবং ২৮ নভেম্বর স্বপনকে গ্রেফতার করে। কারণ স্বপ্নার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ।
এ মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর বিচারিক আদালত স্বপনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন স্বপন। ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। এরপর জেল আপিল করেন স্বপন।
এর মধ্যে অর্থের অভাবে মামলা চালাতে পারছেন না উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের কাছে জেল থেকে চিঠি লেখেন স্বপন। পরে স্বপনের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বিনা পয়সায় এ মামলা লড়ছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
গত ৮ জুলাই এ জেল আপিলের ওপর ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চে শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। এ আপিলের ওপর রায়ের জন্য ১২ জুলাই দিন ধার্য রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
আদালতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। আরও ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী হাসিনা আক্তার। আসামিপক্ষের শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেনকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।