ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৯৭৮ বার
রাজনীতি ডেস্ক:- সংগঠনের নামের সঙ্গে ‘লীগ’ যুক্ত করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বহিষ্কার হয়েছেন মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হেলেনা জাহাঙ্গীর। ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা হেলেনাকে নেতৃত্বে আনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব মেহের আফরোজ চুমকী বলেছেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আমি এককভাবে নেতা বানাইনি। তাকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অবশ্যই সুপারিশ ছিল। এগুলোর সবই রেকর্ড আছে। তাকে উপ-কমিটির পদ দিতে একা একা সিদ্ধান্ত নেইনি।
রবিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যমের কাছে ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটিতে পদ দেওয়ার বিষয়ে এমন প্রতিক্রিয়া জানান মেহের আফরোজ চুমকী।
সম্প্রতি আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি সংগঠন খুলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন হেলেনা জাহাঙ্গীর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি দাবি করেন, সংগঠনটির নাম এখনও সেভাবে পরিচিত না হলেও ইতোমধ্যে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ লাখ লাখ মানুষ এর সদস্য হয়েছেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার পর রবিবার মেহের আফরোজ চুমকি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে গতমাসে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে দাবি করেছেন উত্তর জেলা সভাপতি রুহুল আমিন
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নির্দেশনায় আওয়ামী চাকরিজীবী লীগের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। গত শনিবার (২৪ জুলাই) তিনি বলেন, ভাইয়ার ( মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী) কাছে নির্দেশনা চাইলে তিনি আমাকে বলেন, দায়িত্ব নাও, তুমি না নিলে অন্য কেউ তো ঠিকই দায়িত্ব নিবে। হেলেনা বলেন, এরপরই আমি ওই সংগঠনের দায়িত্ব নেই।
তবে রবিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, হেলেনার এই বক্তব্য দুঃখজনক। একটা অসাংগঠনিক নির্দেশনা আমি কি দিতে পারি? অন্যের কাঁধে দায় চাপানো একটা সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আর হেলেনা জাহাঙ্গীর সম্পর্কে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকী বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর আমার কথায় চলে না। সে কার বুদ্ধিতে চলে, কে তাকে একদিনের মধ্যে ধামাধাম বড় কিছু হয়ে যাবে এমন প্ররোচণা দেয়...। সে মনে করে বড় কিছু তো হয়েই গেছে! অথচ কতোভাবে আমি তাকে বুঝিয়েছি, আপন ছোটবোনের মতো করে বুঝিয়েছি।
কাছাকাছি থাকলে তাকে ‘নিয়ন্ত্রণও’ করতে পারতেন উল্লেখ করে চুমকী বলেন, ...পারতামও, সে যদি আমার কাছাকাছি থাকতো- কথা শুনতো। যে যা বলে লাফাতে লাফাতে যায়, কী করবো? এই হয়ে গেছে তার সমস্যা। এখন বহিষ্কার করতে হয়েছে। সে তার মত চলুক। খারাপও লাগে।
আওয়ামী লীগ মেয়েদের রাজনীতিতে সুযোগ দিতে চায় উল্লেখ করে দলের মহিলা সম্পাদক বলেন, আমরা মেয়েদের কাজ করার সুযোগ দিতে চাই, যদি দেখি কারও কাজ করার আগ্রহ আছে, তাদের সুযোগ দিতে চাই। ওই মেয়ে (হেলেনা) ধীরে চললে ভালো করতে পারতো। বিভিন্ন জায়গায় যায়, নানারকম উপদেশ নেয়, ফলে লোভে পড়ে এই পরিণতি হয়েছে। লোভে পড়লে তো আর রাজনীতি হবে না। মেয়েদের তো লোভ দেখায় অনেকেই। চোখ কান খোলা রাখতে হয়। হাতছানিতো বিভিন্ন রকম থাকেই।
হেলেনা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, সেজন্যই আমি লাইবিলিটিজ বাড়াতে চাই না। সে চলুক তার মতো করে। হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘মাথায় কোনও বুদ্ধি’ নাই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বলেন, সে (হেলেনা) মনে করেছে বড় একটা কিছু পেয়েছি, কাজ করে সবাইকে দেখিয়ে দেবো। এই মনে করেই নাম কথিত আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ গড়ে তুলেছে। এগুলো দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে সেটা তার মাথায়ই নাই। হেলেনার বোঝার মধ্যেও ঘাটতি আছে আমার মনে হয়। আছাড় খেতে খেতে একটা সময় বুঝে যাবে।
তবে এ ঘটনায় হেলেনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাক, তা চান না চুমকী। তিনি বলেন, আমি চাই না একটা মেয়ে শেষ হয়ে যাক। আমি চাই একটা মেয়ে শিখুক, আবার ফর্মে আসুক। হেলেনার কোয়ালিটিও আছে, একদম নাই কিছু তা কিন্তু ঠিক না। বোকা টাইপের, সেন্সের ঘাটতি আছে। তবে অ্যাম্বিশাস, প্রচুর অ্যাম্বিশাস। খারাপও লাগে উপ-কমিটি থেকে বাদ দেওয়া। কী করবো? আমাকে বিব্রত করে ফেলছে। ওর জন্য এত জবাবদিহি কেন করবো?