ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পে আমন আবাদের সুবিধা পাচ্ছে কৃষক

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১৯৯ বার


বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পে আমন আবাদের সুবিধা পাচ্ছে কৃষক

নীলফামারী জেলায় র অনাবৃষ্টির দুর্যোগে আমন আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। সেই ধকল কাটিয়ে ১৫ হাজার কৃষকের আমন আবাদের সুযোগ করে দিয়েছে বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্প। দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকা প্রকল্পটি থেকে এবার সেচ সুবিধা পেয়ে আমন চারা রোপণ এবং পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব কৃষক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ ছিল প্রকল্পটির কার্যক্রম। সে মামলার সমাপ্তি ঘটলে অনাবৃষ্টির এ দুূর্যোগে বিশেষ ব্যবস্থায় এবার চালু করা হয় সেচ কাজ। বর্ষার এ সময়ে যে পরিমান বৃষ্টির প্রয়োজন জেলায় এবার তার অর্ধেকও পাওয়া যায়নি। ফলে চলতি আমন আবাদে অনাবৃষ্টির ধকল থেকে রক্ষা পেয়েছে ১৫ হাজার কৃষক।
গতকাল ওই প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে কৃষকের ব্যস্ততা। সেচের পানিতে অনেকেই ব্যস্ত আমন চারা লাগানোর কাজে। কেউবা ব্যস্ত পরিচর্যায়।

বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস আর শফিক সাদিক  জানান,‘দীর্ঘ ১০ বছর পর এ প্রকল্পে প্রায় আট হাজার একর জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার কৃষক এ সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। এর আগে প্রয়োজনীয় পানির অভাবে এলাকার অনেক জমি পতিত থাকতো। ওইসব জমিতে তামাক, ভুট্টা ছাড়া অন্য কিছু আবাদ হতো না। এবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচ সুবিধার জন্য কৃষকদের কাছ থেকে কোনো সার্ভিসচার্জ নিবেন না বলে জানিয়েছেন। এলাকাবাসী এ সুবিধা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে।’

তিনি জানান, এর আগে এ প্রকল্পের জলাধার ইজারা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উচ্চ আদালতে মামলা হয়। এ কারণে দীর্ঘ ১০ বছর প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ক্যানেলের বিভিন্ন অংশে কিছু ত্রুটি দেখা দিলে স্থানীয় কৃষকরা স্বেচ্ছায় তা সংস্কার করে তাদের জমিতে সেচ সুবিধা নিশ্চিৎ করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১১ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রায় দেশের প্রথম বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে। এজন্য জলঢাকা উপজেলার কালিগঞ্জ নামক স্থানে ১৯৬৭ সালে ব্যারেজ নির্মাণ কাজ শেষ করে অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ করা হয় ১৯৮৩ সালে। এতে ব্যয় হয় ৫৪ লাখ ১১ হাজার টাকা ।

সেচ সুবিধা প্রদানে ২১৭ একর জলধার, ১০ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার প্রধান সেচ খাল ও ২৯ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার শাখা সেচ খাল নির্মাণ করে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালে প্রকল্পের জলাধারটি মাছ চাষের জন্য তুসকা রিসোর্সেস লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান মাছ চাষের জন্য লীজ গ্রহণ করলে বন্ধ হয় ওই সেচ কাজ। পরবর্তীতে ওই লীজ স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের হলে সেটি নিস্পত্তি হয় ২০২০ সালের ১৫ মে। এ সময়ে বন্ধ থাকা প্রকল্পটি পুণরায় চালু করা হয় চলতি বছরের ২৮ জুলাই।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা জানি আমন মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে যে পরিমান বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ছিল তার অর্ধেক পরিমানও হয়নি। সে কারণে কৃষকেরা আমন চারা রোপণ করতে পারছিলেন না। আমরা কৃষকদের চাহিদার কথা চিন্তা করে সামান্য কিছু সংস্কার কাজ সেরে সেচ সুবিধা প্রদান করছি। কৃষকরা এখন সেচের পানি ব্যবহার করে আমন চারা রোপণ করছেন।’   


   আরও সংবাদ