বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৩৮১ বার
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে বুধবার রাতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ও সিটি করপোরেশনের লোকজন। এ সময় পুলিশ ও আনসারদের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এবং আনসার রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। ঘটনার সময় হামলাকারীরা ইউএনওর বাসভবনে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ও গুলিবর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এ ঘটনায় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ আহত হয়েছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন পুলিশ সাংবাদিকসহ আরও শতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইউএনওর বাসভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাত ২টার দিকে ইউএনওর বাসায় যান বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও র্যাবের পরিচালক। এখনও নগরীর পশ্চিমাংশে সিএন্ডবি এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি রেখে অবরোধ করে রেখেছে ছাত্রলীগ। সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনওর বাসভবনের সামনেও বিক্ষোভ করছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনা সূত্রপাত ঘটে বুধবার (১৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে। সিটি করপোরেশনের লোকজন অনুমতি ছাড়া উপজেলা কমপ্লেক্সে ব্যানার ফেস্টুন সরাতে গেলে আনসারদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এ খবর পেয়ে ইউএনও ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তার সঙ্গেও সিটি করপোরেশনের লোকজনের বাকবিতণ্ডা হয়।
ইউএনও তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা চলে যেতে না চাইলে আনসাররা বল প্রয়োগ শুরু করলেই সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বহিরাগতরা।
এ সময় দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ সহ আহত হন শতাধিক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো শহর জুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়।
বরিশাল সদর ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান রাত ১১টায় ভোরের কাগজকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার ও পোস্টার লাগানো ছিল। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তাদের সকালে আসতে বলা হয়। এ কারণে তাঁরা আমাকে গালিগালাজ করে।
ক্ষমতাসীন দলের কয়েকশ নেতাকর্মী রাত সোয়া ১০টায় বাসভবন ঘেরাও করে। আমার বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। বাসভবনের গেইট ভেঙে নিচতলায় ঢুকে পড়ে। বাসায় বৃদ্ধ বাবা-মা করোনায় আক্রান্ত। তারা আমার বাবা-মাকেও গালিগালাজ করতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, অবস্থার অবনতি হলে পুলিশ এবং আনসার সদস্য রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। তাদের গুলিতে এক আনসার সদস্য ও স্থানীয় একজন আহত হয়। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো গুলি করা হয়নি বলে দাবি করেন ইউএনও।
বরিশাল মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেছেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের পর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ইউএনওর বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী নইমুল ইসলাম লিটু বলেন, ইউএনও নিজে সিটি করপোরেশনের কাজে বাধা দেন এবং অশোভন আচরণ করেন। তার প্রতিবাদ করলে গুলিবর্ষণ করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘিরে রেখেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন। বাসায় অবস্থান করছেন ইউএনও। সংঘর্ষের কারণে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ রয়েছে।