ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

বাগেরহাটে চাষ হচ্ছে সৌদির খেজুর

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১০৫৬ বার


বাগেরহাটে চাষ হচ্ছে সৌদির খেজুর

বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সন্ন্যাসী হাজীপাড়া এলাকায় সৌদি খেজুর চাষ করে এলাকার মানুষকে স্বাবলম্বী হতে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দিহিদার জাকির হোসেন নামের একজন আইনজীবী। মরুভূমির এ উদ্ভিদ চাষে নতুন সম্ভাবনাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন স্থানীয়রা ও কৃষি বিভাগ।

১৫ একর মৎস্য ঘেরের খামারের বেড়িব-বাঁধে এখন আড়াই হাজারের মত গাছ রয়েছে জাকিরের। দুই বছরেই ফল এসেছে অনেক গাছে। ইতোমধ্যে আগস্ট মাসে প্রথম একটি গাছ থেকে ফল কেটেছেন তিনি।

খেজুর চাষি দিহিদার জাকির হোসেন জানান, ২০১৪ সালে ১৫ একর জমিতে ৯টি পুকুর খনন করে মাছ চাষ শুরু করি। পুকুরের পাড় জুড়ে বিভিন্ন ফলজ গাছও রোপণ করি। কিন্তু লবণ পানির জন্য এসব ফসলে লাভ হচ্ছিলো না।

অন্যদিকে অতিরিক্ত লবন পানির কারণে ঘেরে গলদা চিংড়ি বা কার্প জাতীয় মাছ ভালো হয় না। তারপরে কয়েক বছরে বাগদা চিংড়িতেও লোকসানে পড়ি। পরে হতাশা কাটিয়ে উঠতে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়াির মাসে রামপাল সৌদি খেজুর বাগান নাম দিয়ে এ খেজুর চাষ শুরু করি। প্রথম দিকে লোকজন আমাকে পাগল বলতো। ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে ২০০ সৌদি খেজুরের চারা এনে রোপণ করি। পরবর্তীতে নরসিংদী থেকে আরও ১০০ চারা আনি।

বর্তমানে আমার আজোয়, মরিয়ম, সুকারি, আম্বার ও বারহি এ পাঁচ জাতের আড়াই হাজারের মত খেজুর চারা রয়েছে। এছাড়াও বিচির তৈরি আরও ২৫০০ চারা প্রস্তুত রয়েছে নার্সারিতে। বর্তমানে ৫০ টি গাছে ফলন হলেও আগামী এক বছরের মধ্যে বাগানের অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ গাছে খেজুর হওয়া শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

এছাড়া খেজুরের পাশাপাশি ভিয়েতনামি নারকেল, কয়েক প্রজাতির আম, আমড়া, মাল্টাসহ বেশকিছু ফলের চাষ করেন তিনি। খামারে রয়েছে ৩০টি দেশী গরু।
নতুনদের উদ্দেশ্যে জাকির হোসেনের পরামর্শ কলম এবং বিচি দুইভাবেই সৌদি খেজুরের চারা তৈরি হয়। এ বিচির চারার বেশিরভাগ পুরুষ হয়ে যায়। যার ফলে ফল আসে না। তাই নতুন যারা শুরু করবে তাদেরকে কলম (অপ শুট)‘র চারা ক্রয়ের জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
জাকির হোসেন আরো বলেন, আমার এখানে এখন সার্বক্ষণিক তিনজন কর্মচারী রয়েছে। ভবিষ্যতে এ নার্সারীতে আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, সৌদি খেজুর মরুভূমির ফসল। দিহিদার জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি এ খেজুর চাষে সফলতা পেয়েছেন। তবে খেজুরের স্বাদ, পুষ্টিগুন ও উৎপাদনের পরিমান ঠিক থাকবে কিনা তা এখনি বলা যাচ্ছে না। যদি সব কিছু ঠিক থাকে তবে লবনাক্ত পানির এলাকার জন্য একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে। সৌদি খেজুর চাষের এ উদ্যোগকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।


   আরও সংবাদ