ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ভাসমান বেডে সবজি-চারা উৎপাদনে লাভবান কৃষক

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১০৩ বার


ভাসমান বেডে সবজি-চারা উৎপাদনে লাভবান কৃষক

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ৮টি ইউনিয়নে ভাসমান বেডে শাকসবজি চাষ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। অত্র উপজেলায় ২৭০ হেক্টর জমি ৬ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতায় পতিত থাকছে। তাছাড়া ডাকাতিয়া নদীতে চাঁদপুর – ফরিদগঞ্জ অংশে প্রায় ১৮ কিলো মিটার পুরোটাই কচুরিপানা দিয়ে বেষ্টিত রয়েছে। উপজেলার ১,৩,৪, ৫,৬,৯,১০,১৪ নং ইউনিয়নে এ কার্যক্রম চলছে। ভাসমান বেডে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, শষা, লাল শাক, পাট শাক, কলশী শাক, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি চাষ হচ্ছে।

স্থানীয় উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্র জানায়, কৃষক-কৃষানীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১.২৫ মিটার প্রস্থ, ৪ থেকে ৫ মিটার উচ্চতার কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করে ও পঁচা কচুরি পানা উপরে দিয়ে প্রতিটি বেড তৈরিতে ৭/৮ জন শ্রমিকের লাগে। প্রতিটি বেড প্রস্তুত করতে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়।

৪/৫ বার ফসল উৎপাদন করা যায়। তিনটি বেড হতে গড়ে ১৩/১৪ হাজার টাকার আয় করা সম্ভব হচ্ছে। ফসল ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে তোলা যায়। এত পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরন করে বাজারে উদ্বৃত শাকসবজি ও চারা বিক্রি করে কৃষকরা বেশ ভালোই করছে বলে জানায়। তাছাড়া জৈবসারে উৎপাদিত এ শাকসবজিতে কোন ধরনের কিটনাশক ছিটানো হচ্ছেনা।

সোভান এলাকার ভাসমান বেডে শাকসবজি চাষী মো. মিজানুর রহমান তালুকদার জানান, আমার ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ২৫টি বেড রয়েছে। জনতা ব্যাংক হতে ঋণ নিয়ে ও ধার দেনা করে চাষ করে চলছি। স্থানীয় কৃষি দপ্তর প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সাথে ৫শত টাকাও দিয়েছে। এছাড়া মাত্র ১ হাজার টাকা পেয়েছি বেড তৈরি বাবত। সরকার আমাদেরকে সুদবিহিন ঋণের ব্যবস্থা চালু করলে আমরা ফরিদগঞ্জে ভাসমান বেডে সবজি চাসে বিপ্লব ঘটাতে পারবো।

বাবুল গাজী জানায়, আমার ১২টি ভাসমান সবজির বেড রয়েছে। এখানে সবজি ও চারা উৎপাদন করে মোটামুটি ভালোই চলছেন বলে জানান। তিনিও সরকারী বরাদ্দ বাড়ানোর দাবী জানান। তিনি আরোও জানান, আমাদেরকে কৃষি অফিস ১ থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে থাকে এতে লেবারের চা-বিস্কুটের পয়সা হয়ে থাকে।

অপর চাষী সিরাজ মিয়া জানান, আমার ৩ টি ভাসমান বেড রয়েছে আমি এক টাকাও পাইনি। তাছাড়া প্রশিক্ষণ ও দিতে পারিনি। আমি কোন রকম সবজি চাষ করেই সংসার চালিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ জানান, সম্পূর্ন জৈব পদ্ধতিতে ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আয়বর্ধক একটি চাষ প্রক্রিয়া। পারিবারিক ভাবে সবজির চাহিদা মেটায়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অপার সম্ভবনা রয়েছে ভাসমান বেডে সবজি চাষে। সরকার বড় ধরনের বরাদ্দ দিলে এ এলাকার ১৮ কি: মি: ডাকাতিয়া নদীর ফরিদগঞ্জের অংশে কচুরিপানা জটকে কাজে লাগিয়ে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করার উপযুক্ত অঞ্চল হচ্ছে, এ উপজেলার বদ্ধজলাশয়ের ভূমিগুলো। আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ভাসমান বেডে সবজি চাষ কিভাবে আরোও ভালো করা যায় এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলবো।


 


   আরও সংবাদ