ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

মাল্টাবাগান করে সাফল্যের হাসি কুষ্টিয়ার ময়না খাতুনের

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:২৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৩২ বার


মাল্টাবাগান করে সাফল্যের হাসি কুষ্টিয়ার ময়না খাতুনের

মাল্টা বাগান করে সাফল্য অর্জন করেছেন জেলার নারী উদ্যোক্তা ময়না খাতুন। বেশ কয়েক বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে মাল্টা বাগান  গড়ে তুলেছেন কুষ্টিয়ার  ময়না খাতুন। জেলার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকার প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ময়না। স্বামী প্রায় দুই যুগ দক্ষিণ ধরে দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকলেও দেশে মাল্টা বাগান নিয়েই তার যত ব্যস্ততা। যদিও এই বাগান তৈরির ব্যাপারে স্বামীরও উৎসাহ রয়েছে।
  
জানা যায়, গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ও ডালে ডালে ঝুলছে থোকায় থোকায় মাল্টা। বাতাসে মাল্টার টক-মিষ্টির গন্ধ। দুইজন শ্রমিক বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। আর কোন গাছের পাতা ছিঁড়তে হবে গাছের গোড়া পরিষ্কার করতে হবে এসব নির্দেশনা দিচ্ছেন ময়না খাতুন। পুরো বাগানটি একটি সবুজ ছায়ায় ঘেরা।   গেলো বছর ৩ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন তিনি। এ বছর তার বাগানে বেশ অনেক মাল্টা ধরেছে। লাখ চারেক টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি। 

মাল্টা বাগানেই কথা হয় ময়না খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামীর অনুপ্রেরণায় ২০১৭ সালে সিলেট থেকে ৫৭০টি বারি মালটা-১ এর চারা এনে ৬ বিঘা নিজের জমিতে মাল্টা বাগান গড়ে তুলি। বর্তমানে মাল্টার বাগান এখন দেখার মতো হয়েছে। কাক্সিক্ষত ফলও পেতে শুরু করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই বাগানের মাল্টা বিক্রি শুরু করবেন বলেও জানান তিনি। 

তার বাগান থেকেই পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যায় বলে বিক্রি করতে কোন ঝামেলাই হয় না। এছাড়াও তার বাগানে সিডলেস ও চায়না লেবু এবং কিছু লিচু গাছও রয়েছে। প্রতিকেজি মাল্টা ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়াও অনেক দর্শনার্থীরা এই বাগান পরিদর্শনে আসেন। এতে তিনি আনন্দও পান। তবে, নারী হিসেবে তাকে সফল হতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। শুনতে হয়েছে নানান জনের নানান কথা। তবুও দমে যাননি তিনি। 

নিজ প্রচেষ্টায় এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। এতোকিছুর পরেও একজন নারী হিসেবে ফলের বাগান গড়ে তোলা সেটি ছিলো অনেকটা দুঃসাহসের ব্যাপারও বটে। ভবিষ্যতে নারীদের উজ্জ্বীবিত হওয়ার জন্য কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
 
প্রায়ই দেখা যায় এই মাল্টা বাগান পরিদর্শনে অনেক দর্শনার্থী আসেন। তেমনি একজন দর্শনার্থী বিভাস চৌধুরীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বাগানে এসে নিজ হাতে ফল পেড়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। বাগান ঘুরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে এবং তরতাজা গাছপাকা মাল্টাও কিনতে পাওয়া যায়।
 
উপজেলার উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল গোলাম রাজন জানান, ‘মাল্টা একটি অর্থকরী ফসল। মাল্টা বারি-১ একটি উচ্চ ফলনশীল সুস্বাদু ফল। ময়না খাতুনের মাল্টার বাগানে আমি সবসময়ই নানান পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি।’ 

তিনি বলেন, ভেড়ামারায় তার মতো এতোবড় মাল্টার বাগান আর নেই। তাকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কেবল পরামর্শ প্রদান করেছি। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ জানান, একজন নারী হয়েও ময়না খাতুন এতো সুন্দর মাল্টা বাগান করে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার বাগানে কোন প্রকার ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। এমন সুন্দর বাগান এ অঞ্চলে মাল্টা উৎপাদনে অনেককেই উৎসাহিত করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 


   আরও সংবাদ