বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১০:২৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৬১ বার
প্রণোদনার ৭০৫ কোটি টাকা কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে পারল না বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা মহামারীর মধ্যে চার শতাংশ সুদে কৃষককে এ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। পাঁচ হাজার কোটি টাকার স্কিমের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৪২৯৫ কোটি টাকা। ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের অসহযোগিতার কারণে এ টাকা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। বার বার সময় বৃদ্ধি করার পরও বিতরণ না হওয়ায় স্কিম বন্ধ করতে হলো বাংলাদেশ ব্যাংককে।
করোনা মহামারীর মধ্যে কৃষি ও কৃষককে সহায়তার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা স্কিম গঠন করে সরকার। এ জন্য ৪৩টি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে। চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী কৃষকের কাছে চার শতাংশ হারে ঋণ বিতরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি করলেই বিতরণকৃত ঋণের অর্থ এবং চার শতাংশ হারে অপারেটিং চার্জ দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ঋণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিতরণ না হলে কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করা হয়। তারপরও এ টাকা কৃষকের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। কিš' এ সময়ের মধ্যেও প্রণোদনা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। দেড় বছরের অধিক সময়ে এ ৭০৫ কোটি টাকা থেকে যায়। বিতরণ না হওয়া টাকা রেখেই পাঁচ হাজার কোটি টাকার স্কিম বন্ধ করতে হয়। গঠন করা হয় নতুন অন্য একটি স্কিম।
কৃষি প্রণোদনা বিতরণের জন্য ৪৩টি ব্যাংকের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার সর্বনি¤œ প্রণোদনা বিতরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে চুক্তি করা ২০ বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে আইএফআইসি বিতরণ করে লক্ষ্যমাত্রার ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, ফাস্ট সিকিউরটি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ১৫ শতাংশ বিতরণ করে, সাউথইস্ট ব্যাংক ১৬ শতাংশ বিতরণ করে, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ২৭ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংক ৩৪ শতাংশ, কমার্স ব্যাংক ৩৫ শতাংশ, যমুনা ব্যাংক ৩৮ শতাংশ, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৩৮ শতাংশ এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ৮০ শতাংশ, সোসাল ইসলামী ব্যাংক ৪০ শতাংশ ও ইউনিয়ন ব্যাংক ৪৩ শতাংশ বিতরণ করে। এ সব ব্যাংকের অসহযোগিতার কারণে কৃষকের কাছে প্রণোদনার টাকা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
ব্যাংকগুলোর তথ্যে দেখা যায়, এ সব ব্যাংকের ২০২১-২২ অর্থ বছরের কৃষিঋণ বিতরণও সন্তোষজনক নয়। ব্যাংকগুলো অন্যান্য সময়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ঋণ বিতরণে অনীহা দেখিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে কৃষি ঋণ বিতরণের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার এক-তৃতীয়াংশও বিতরণ করতে পারেনি। জুলাই-আগস্ট দুই মাসে এ সব ব্যাংকের পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার আট শতাংশের বেশি বিতরণ করার কথা থাকলেও বিতরণ করেছে দুই থেকে তিন শতাংশের মধ্যে।
করোনা মহামারীর মধ্যে শিল্প কারখানা এবং সেবা খাতে উৎপাদন-সেবা ব্যাহত হলেও কৃষি সচল ছিল। সরকারও চেয়েছিল যে কোন উপায়ে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ সচল রাখতে। করোনা মহামারী প্রলম্বিত হলেও আবাদযোগ্য সকল জমি চাষের আওতায় আনার জন্য কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছিল। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি খাতে প্রণোদনার পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। ফসল কেটে ঘরে তোলা, সরবরাহ ও বাজারজাত করার মতো কার্যক্রম সচল ছিল। কিš' প্রণোদনার পুরো টাকা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। ৭০৫ কোটি টাকা বিতরণ না করেই বন্ধ করতে হলো স্কিম। খোলা কাগজ