ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

কালো জাতের ধান চাষে তাক লাগিয়েছেন কৃষক শাহাবুদ্দিন

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:৫৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৮৬ বার


কালো জাতের ধান চাষে তাক লাগিয়েছেন কৃষক শাহাবুদ্দিন

এই প্রথম পরীক্ষামূলক মাগুরার মুহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের আদর্শ কৃষক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ লিটন কালো চালের ধান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত দামি এই ধান চাষ করেছেন ৬৫ শতক জমিতে। ব্লাক রাইস চাষাবাদ অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতো দেখতে দৃষ্টি নন্দন ফলনও বেশি। এতে কোনো অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না অতিরিক্ত পরিচর্যার। ব্যতিক্রমী এবং দুর্লভ এই ধান চাষে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। 

অন্যদিকে অনেক দামি ও দুর্লভ এই ধান রোপণ করে কৃষকরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ। এই ধানের চালের ভাত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজাপুর ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা এলাকায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধমূলক নতুন কালো ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সোবহান, রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বিশ্বাস, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার, রাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. শাখারুল ইসলাম প্রমুখ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিজ অর্থায়নে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঁচ জন আর্দশ কৃষককে ৫ কেজি করে কালো ধানের বীজ প্রদান করা হয়।

উপজেলায় বিভিন্ন এলকায় প্রায় আট বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক এই কালো ধানের চাষ করা হয়েছে। সফল চাষ ও ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আর সফলতার সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগ এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ ও সচেতনতা বাড়াতে পরিকল্পনা করে যাচ্ছেন।

কৃষক লিটন বলেন, 'প্রথমে ইউটিউবে দেখে কালো ধান সম্পর্কে জানতে পেরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করি। শুরু থেকেই কৃষি কর্মকর্তারা ফসলের তদারকিসহ আমাকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। আগামি মৌসুমে বেশি জমিতে এই ধানের চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চাই।'

বিনোদপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কালোধান চাষি মাসুদ শেখ জানান, 'কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে সহযোগিতায় ৩৩ শতক জমিতে কালো ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো পেয়েছি।'

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোকছেদুল মোমিন বলেন, এই জাতের ধানের চালে বিভিন্ন ওষুধি গুণ রয়েছে। এই  চালের ভাতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

কালো ধানের গুণাগুণ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবহান বলেন, মূলত এসব জাতের ধানের রঙ সোনালি বা কালচে হয়। তবে চাল একেবারে কুচকুচে কালো। কালো চালে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। কালো ধানে ডায়াবেটিস প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে। এ চাল অনেক উপকারী।

পুষ্টিসমৃদ্ধ এই চাল কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন কৃষিবিদ মো. আব্দুস সোবহান। তিনি বলেন, এই মূল্যবান ধানের জাত খুব দ্রুত দেশের কৃষকের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হবে।


   আরও সংবাদ