বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৪৭ বার
নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চৌমুহনী পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আজ শনিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। শুক্রবার দুপুরে চৌমুহনীতে মন্দির-হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসাবাড়িতে হামলার ঘটনার পর জেলা প্রশাসন এই ঘোষণা দেয়। নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ইত্তেফাক অনলাইনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী-সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লায় ঘটনায় শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে জুমার নামাজ শেষে কয়েক হাজার মসুল্লি চৌমুহনী শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা বাণিজ্যিক শহরের প্রধান সড়কের এসে কলেজ রোডসহ অন্যান্য এলাকায় মন্দিরের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের ওপর তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। মিছিলকারীরা শহরের সড়কের দুই পাশে হিন্দুদের দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর চালান।
সূত্র আরও জানায়, মিছিলকারীরা শহরের কলেজ রোডে ঢুকে পড়ে আশেপাশের অনেক দোকানে এবং স্টেশনের পূর্ব পাশের রাম ঠাকুর আশ্রম, কলেজ রোডের রাধা মাধব জিওর মন্দির, ইস্কন মন্দিরে ভাঙচুর চালানানোসহ আগুন দেন। হামলার সময় ইস্কন মন্দিরে থাকা যতন সাহা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক বিনয় কিশোর রায় বলেন, চৌমুহনীতে অতীতে কখনো হিন্দুদের দোকানপাট, মন্দির ও বাসাবাড়িতে এমন হামলার ঘটনা ঘটেনি। আজ দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত হামলা-ভাঙচুরের তাণ্ডব চলে। হামলায় ইস্কন মন্দিরে যতন সাহা নামে একজন মারা যান। এছাড়া অনেকেই আহত হয়েছেন।
বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ এমরান বলেন, ‘জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে বের হন। তারা চৌমুহনী প্রধান সড়কের দুই পাশের দোকানপাট, বিভিন্ন এলাকার মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিআর সেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকদার ও চার পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আরএমও সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ‘আজ বিকেলে চৌমুহনীতে হামলার ঘটনায় যতন সাহা নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এছাড়া চার পুলিশসহ পাঁচ জনকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘নতুন করে সহিংসতা এড়াতে শনিবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চৌমুহনী পৌর-এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বর্তমানে বিজিবি, র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ তবে, একজনের মৃত্যুর বিষয়টি জেলা প্রশাসক নিশ্চিত করেননি।