ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ২০:২২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৭৭ বার
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কৃষিখাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন গত ৫০ বছরে চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শুধু বিশ্বকেই নয়, বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকেও বিস্মিত করেছে।’
ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশকে আজ পৃথিবীর সামনে কেসস্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ঝড়, বন্যা, জ্বলোচ্ছাসের যে দেশে মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন, মানুষের ঘনত্ব সর্বোচ্চ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যার নিত্যসঙ্গী, প্রতিবছর বন্যায় যে দেশের প্রায় অর্ধেক স্থলভূমি পানিতে তলিয়ে যায়, সেই দেশ এ সমস্ত কিছু মোকাবিলা করে কিভাবে কৃষিতে বিস্ময়কর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছে সেটি সত্যিই পৃথিবীর সামনে উদাহরণ।
তিনি আজ রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত ‘বিজয়ের ৫০ বছর: কৃষিখাতে অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কৃষি অর্থনীতিবিদ মো. মকবুল হোসেন এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান তাদের আলোচনায় কৃষিখাতে দেশের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন।
কৃষিতে বিস্ময়কর অর্জনের জন্য কৃষিবিদ ও আমাদের কৃষকদের অবদানকে সবচেয়ে বড় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষিবিদরাই ফসলের উচ্চ ফলনশীল ও উপকূলে আবাদযোগ্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছেন, এগুলো আমাদের জন্য সম্পদ, পৃথিবীর জন্যও সম্পদ, যা না হলে আজ আমাদের পক্ষে এই অর্জন সম্ভবপর হতো না। বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম দেশ অথচ ধান উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে সপ্তম। নেপালে যখন ভূমিকম্প হলো আমরা ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছি। এটি কোনো জাদুর কারণে নয় বরং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভবপর হয়েছে।
একইসাথে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কৃষি জমির পরিমাণ গত ৫০ বছরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি-কলকারখানার কারণে। এখন ৩০ শতাংশ মানুষ নগরবাসী, ১৫ বছর পর তা প্রায় ৫০ শতাংশ হবে। একই সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জমির উৎপাদন ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। দেশে প্রতিবছর এক শতাংশ হারে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। বিশ বছর পর আমাদের সব উদ্ভাবন কাজে লাগিয়েও আজকের মতো উৎপাদন যে সম্ভবপর হবে না, তা সবার ভাবা প্রয়োজন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নগর কৃষিকে মূলধারার কৃষির সাথে যুক্ত করে কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন। এবিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী কৃষিবিদ শামসুল আলম যে পরামর্শ দিয়েছেন তা আমাদেরকে এগিয়ে নেবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম তার বক্তৃতায় কৃষিকে প্রাকৃতিকভাবে সবুজ এই দেশের সবচেয়ে বড় ভিত বলে উল্লেখ করে বলেন, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে টেকসই ও যুগোপযোগী কৃষি অর্থনীতির বিকল্প নেই।
সূত্র : বাসস