ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

জামানতবিহীন ঋণ পাবেন কভিডে গ্রামে ফেরা মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২২ ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮৬ বার


জামানতবিহীন ঋণ পাবেন কভিডে গ্রামে ফেরা মানুষ

কভিড মহামারি ও অন্যান্য কারণে শহরে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়া জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখান থেকে মাত্র ৬ শতাংশ সুদে এসব মানুষ জামানতবিহীন ঋণ পাবেন। পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের নাম দেওয়া হয়েছে 'ঘরে ফেরা'। এ তহবিলের আওতায় একজন ব্যক্তি ব্যাংক থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। গতকাল নতুন স্কিমের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, স্কিম বাস্তবায়ন করবে মূলত রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক। বেসরকারি ও বিদেশি কোনো ব্যাংক আগ্রহী হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এখানে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সরল সুদে বিতরণ করবে। কোনো নিরাপত্তা জামানত ছাড়াই এ ঋণ দেওয়া হবে। দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ (কিস্তি অব্যাহতি) সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে দুই বছর। আর দুই লাখ টাকার বেশি থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ মেয়াদ হবে তিন বছর।
নারীদের জন্য এ ঋণের অন্তত ১০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। কোনো গ্রাহক এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপি না হলে পরিশোধের পর নতুন করে আবার ঋণ নিতে পারবেন।
এই স্কিমের মেয়াদ হবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। এ স্কিমে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক নিজস্ব নেটওয়ার্ক তথা- শাখা, উপশাখা, এজেন্ট ব্যাংকিং এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও আদায় করতে পারবে। তবে কোনোভাবে এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থা বা অনুরূপ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ফেসিলিটেটর এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এখান থেকে ঋণ নিয়ে পুরাতন ঋণ সমন্বয় করা যাবে না। সঠিক খাতে ঋণ ব্যবহার না হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২ শতাংশ জরিমানা করে এককালীন পুরো ঋণ আদায় করা হবে। আর কোনো ব্যাংক ৬ শতাংশের বেশি সুদ নিলে সে পরিমাণ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ১ শতাংশ জরিমানা করে এককালীন আদায় করা হবে।
ঘরে ফেরা তহবিল থেকে স্বল্প পুঁজির স্থানীয় ব্যবসা, পরিবহন খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহন ক্রয়, ক্ষুদ্র প্রকৌশল শিল্প, মৎস্য চাষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন, তথ্যপ্রযুক্তি সেবাকেন্দ্র ও অন্যান্য সেবা উৎসারী কর্মকাণ্ড, বসতঘর নির্মাণ বা সংস্কার, সবজি ও ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ফসল বিপণনে ঋণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার করে এমন কর্মকাণ্ড, যেমন- ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে ধান ভাঙানো, চিড়া বা মুড়ি তৈরি, নৌকা কেনা, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন কেনা, কৃত্রিম গহনা তৈরি, মোমবাতি তৈরি এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এমন ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া যাবে। ঋণের ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে শহর থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ কর্ম হারিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আগে নেওয়া বিভিন্ন প্রণোদনামূলক পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় তাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে নতুন এ স্কিম গঠন করা হয়েছে।

সূত্র : ইত্তেফাক


   আরও সংবাদ