ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৫ জানুয়ারী, ২০২২ ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৫৭ বার
পদ্মা-যমুনা নদীর অববাহিকা যেন হলুদ শাড়ি পরিধান করেছে। সরিষাক্ষেত ভরে গেছে ফুলে ফুলে। এ বছর চরাঞ্চলে মৌচাষিরা না আসায় সরিষা ফুলের মধু ফুলেই শুকিয়ে যাচ্ছে।
চলতি রবি মৌসুমে পাবনা জেলার চরসাফুল্লা, চরপেচাকোলা, চরআড়ালিয়া, সাঁড়াশিয়া, কল্যাণপুর, চরসাফুল, চরনাগদা, চরঢালা, চরকল্যাণপুর, পূর্বশ্রীকণ্ঠদিয়া, পদ্মারচর, চাঁমতারা, শিংঘুলি, ভারদিঘুলিয়া, চরবলরামপুর, চরভাড়ারা, সাদিপুর, সুদিরাজপুর, আশুতোষপুরসহ ছোট বড় ৩০টি চরে সরিষার আবাদ হয়েছে।
মৌমাছির বিচরণে সঠিকভাবে সরিষার ফুলে পরাগায়ন ঘটে। তাতে সরিষার উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেক। এতে লাভবান হন কৃষকরা। শুধু তাই নয় পরিবেশবিদরা বলছেন, ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার কম হওয়ায় উপকৃত হচ্ছে পরিবেশ। মৌমাছি শুধু মধুই সংগ্রহ করে না, ফসলের জন্য ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ মেরে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহায়তা করে থাকে।
খুলনার মৌচাষি জসিম সরদার জানান, পাবনা অঞ্চলে যে পরিমাণ সরিষার চাষ হয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মৌচাষি থাকলে প্রায় ছয় কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা সম্ভব। তার দু’টি গ্রুপে ৩৪০টি মৌমাছির বাক্স আছে। প্রতিটি বাক্সে একটি করে রানী মৌমাছি রয়েছে।
তিনি বলেন, ৩৪০টি মৌ বাক্সে এক মাসে ১৫৪ মন মধু সংগ্রহ করা যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৬ লাখ টাকা। পাবনা জেলার সমতল এলাকায় শতাধিক মৌ চাষির দল মধু সংগ্রহ করেছে। শুধু দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে মৌ চাষিরা পদ্মা-যমুনার চর থেকে মধু সংগ্রহ করে না। এতে ছোট বড় ৩০টি চরের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির সরিষা ফুলের মধু ফুলেই শুকিয়ে যাচ্ছে।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সূত্র মতে, গত বছর জেলায় ৩২ হাজার ৯৪২ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছিল। গত মৌসুমে সরিষার ভালো দাম পাওয়ায় চলতি মৌসুমে চাষিরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়ে।
বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মসকর আলী জানান, উন্নত জাতের বীজ, সারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে ছিল। পদ্মা ও যমুনার চরের মাটি বেলে, দো-আঁশ হওয়ায় পানি ধারণের ক্ষমতা কম। মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম হলে জৈবসারের প্রয়োজন হয়। সরিষা চাষ করলে খাবার তেলের চাহিদা পূরণসহ পাতা ও ফুল ঝরে পড়ে জৈবসার তৈরি করে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে।