ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারী, ২০২২ ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮২ বার
ধারাবাহিকভাবে কমছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এর ফলে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেশি গ্রহণ করতে হচ্ছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে ৪৪ হাজার ২৭০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এ সময়ে পুরোনো সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।
এ খাতে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ২৫ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ হাজার ১৯ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৩ শতাংশ কম। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের এ তথ্য উঠে এসেছে।
সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের অর্থ সংগ্রহ কমে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাত থেকে বেশি ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে সরকার ১৮ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর ফলে ৩০ ডিসেম্বর শেষে সরকারের ব্যাংক ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা, যা গত ৩০ জুনে ছিল ২ লাখ ২ হাজার ১১৫ কোটি টাকা।
সুদহার কমানোসহ নানা শর্ত জুড়ে দেওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে সুদহার কমানো হয়েছে। আবার ঘোষণার বাইরে সঞ্চয়পত্র থাকলে জেল-জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এ কারণে অনেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাত থেকে সরকার নিট ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। প্রথম পাঁচ মাসে অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার ৩১ শতাংশ ঋণ নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী চলতি বছরের একক মাস নভেম্বরে সরকার মোট ৮ হাজার ৯৪১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেছে। এর মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে ৮ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রি হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসাবে আলোচিত সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ৭০১ কোটি টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে (অনুদান ব্যতীত) ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এর আগের অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও এর বিপরীতে সরকার নিয়েছিল মাত্র ২৬ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়ায় সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। চলতি বাজেটে ২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা পোস্টাল সেভিংস কিনতে হলে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র মিলবে শুধু সঞ্চয় অধিদপ্তরে।
সব শেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার কমানো হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকার নিচে মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
সূত্র : ইত্তেফাক