ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন কমে যাওয়ায় সঙ্কটে মানিচেঞ্জাররা

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী, ২০২২ ১০:০২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫১৫ বার


বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন কমে যাওয়ায় সঙ্কটে মানিচেঞ্জাররা

করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিদেশে পর্যটক, শ্রমিকদের যাতায়াত কমে গেছে। এতে লেনদেন কমে গেছে ব্যাংকের বাইরে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান মানিচেঞ্জারগুলোতে। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় কমে গেছে। এতে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতনভাতা, ভবন ভাড়াসহ ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে সঙ্কটে পড়া মানিচেঞ্জারগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করতে শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলা হয়েছে, বার্ষিক লেনদেন ৫ লাখ টাকার শর্ত পূরণ না হলেও লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। এ বিষয়ে মানিচেঞ্জারগুলোর জন্য গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশে ২৩৫টি মানিচেঞ্জার রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকাতেই রয়েছে ১৭২টি। বাকি ৬৩টি সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান আয় হয় বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে। সাধারণত বিদেশ থেকে যারা শ্রমিক বা পর্যটক দেশে ফিরে আসেন তাদের কাছে থাকা নগদ বৈদেশিক মুদ্রাবাজার মূল্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে কেনা হয়। আবার যারা বিদেশে চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, ভ্রমণের জন্য যান তাদের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা অপেক্ষাকৃত বেশি মূল্যে বিক্রি করেন। কেনা ও বিক্রির মধ্যে সাধারণত ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা পার্থক্য থাকে। আর এ পার্থকই হলো তাদের মুনাফা। এ মুনাফা দিয়ে তারা কর্মচারীদের বেতনভাতা, ভবন ভাড়াসহ ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা অনুযায়ী, সাধারণত নির্ধারিত নিয়ম মেনেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য লাইসেন্স নিতে হয়। আবার এ লাইসেন্স প্রতি বছরই নির্ধারিত শর্ত মেনে নবায়ন করতে হয়। বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী, সাধারণত ঢাকায় অবস্থিত মানিচেঞ্জারগুলোর বছরে কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার লেনদেন করতে না পারলে পরের বছর প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না। আর ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করতে হলে বছরে কমপক্ষে সাড়ে তিন লাখ ডলার লেনদেন করতে হবে। এর কম হলে কোনো প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিদেশে চিকিৎসা, পর্যটক ও শ্রমিক আসা-যাওয়া কমে গেছে। এতে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার পাশাপাশি মানিচেঞ্জারগুলোর লেনদেনও কমে গেছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন দুই-আড়াই লাখ ডলারে নেমে গেছে। এতে কমে গেছে তাদের আয়। আয় কমে যাওয়ায় অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। কর্মচারীদের বেতনভাতা, ভবন ভাড়াসহ ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় মানিচেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে লাইসেন্স নবায়নের শর্ত শিথিল করার অনুরোধ করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নীতিমালা শিথিল করা হয়।


 
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক ঢাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন ৫ লাখ ডলারের নিচে এবং ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন সাড়ে তিন লাখ ডলারের কম হলেও প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। এ নির্দেশনা গতকালই প্রতিষ্ঠানগুলোর অবগতির জন্য পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।

রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ হলো : রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করতে প্রবাসীদের আয়ের আরো চারটি নতুন উৎস অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে আয়ের উৎস হিসেবে এসব বিষয়ের সুনির্দিষ্ট উল্লেখ ছিল না। এখন থেকে এসব উৎস থেকে রেমিট্যান্স পাঠালে তার উপর সরকার ঘোষিত আড়াই শতাংশ ভর্তুকি সুযোগ প্রদান করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গতকাল জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের শর্তানুসারে কোনো প্রবাসী ঘোষণা দিয়ে বৈধ উপায়ে বা স্বীকৃত ব্যাংক কিংবা এক্সচেঞ্জ হাউজের মাধ্যমে অর্থ দেশে পাঠালে সেই অর্থের বিপরীতে ভর্তুকি সুবিধা প্রদান করা হবে। বিশেষ করে প্রবাসীদের অবসর-পরবর্তী ভাতা, প্রভিডেন্ট আয়, নিয়োগ কর্তাকর্তৃক বোনাস ও পারিতোষিক ও ছুটি উপভোগকালীন ভাতা থেকে প্রাপ্ত আয়ে ভর্তুকি বোনাস দিতে নির্দেশ প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


   আরও সংবাদ