নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৯ মার্চ, ২০২২ ১৬:৩৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৩৮৬ বার
আকমাল হোসেন, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ পত্নীতলা উপজেলা সদর নজিপুর বাসস্ট্যান্ডের
নজিপুর—নওগাঁ সড়ক, নজিপুর—জয়পুরহাট সড়ক, নজিপুর—সাপাহার সড়ক, নজিপুর—বদলগাছী সড়ক সহ
অন্যান্য সড়ক গুলির বেহাল অবস্থা। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট—বড় দূর্ঘটনা। এসব এলাকার সড়কের পাশে
অবৈধ দখলদারদের দখলকৃত সওজের যায়গা গুলি পূনঃ উদ্ধার সহ সড়ক প্রসস্থ করন ও সড়ক পূনঃ নির্মান
সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।
নজিপুর—নওগাঁ সড়কের চৌমাসিয়া পর্যন্ত এবং নজিপুর—জয়পুরহাট সড়কের মঙ্গলবাড়ি পর্যন্ত সড়ক
চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। অপরদিকে নজিপুর—সাপাহার সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের উপরে ওঠে
হাটু পরিমান পানি। এই সড়ক গুলো দিয়ে প্রতিদিনই কয়েক হাজার ছোট—বড় যাবাহন চলাচল করলেও
সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কোন নজরদারী না থাকায় এলাকাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক গুলি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত
করেও কোনো কাজ হয়নি।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের হুকুম দখল করা বেদখল যায়গা গুলি অবৈধ ভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মান
করেছে অবৈধ দখলদাররা। এসব অবৈধ দখলদারদের কেউ কেউ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আদালত থেকে
একতরফা স্থগিতাদেশের রায় নিয়ে যায়াগা গুলিতে বানিজ্যিক ভবন তৈরী করে বছরের পর বছর নিজ দখলে
রেখে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে করে নজিপুর বাসস্ট্যান্ড গোলচত্বর থেকে পার্বতীপুর মোড়,
বাসস্ট্যান্ড থেকে ফতেপুর মোড়, বাসস্ট্যান্ড থেকে খিরশীন মোড়, বাসস্ট্যান্ড থেকে মধইল বাজার মোড়
পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়কের প্রসস্ততা সংকীর্ন হয়ে এসেছে। ফলে পথচারী সহ ছোট—
ছোট যাবাহন গুলো চলাচল করে এখন প্রধান সড়কের উপর দিয়ে। এতে করে প্রতিদিন মারাত্মক ঝঁুকির
মধ্য দিয়ে যানবাহন সহ পথচারীরা চলাচল করছে।
সরজমিনে দেখাগেছে, নজিপুর—জয়পুরহাট সড়কের নজিপুর বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর এলাকা থেকে ফতেপুর
পর্যন্ত, নওগাঁ সড়কের পার্বতীপুর মোড় পর্যন্ত, সাপাহার সড়কের মধইল বাজার পর্যন্ত ও বদলগাছী
সড়কের খিরশীন মোড় পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর যায়গা গুলো সহ নজিপুর পৌরসভা এলাকার সড়কের
পাশ গুলো ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় অত্র এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা একে বারেই বন্ধ
হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টির পানিতেই সড়কের উপর পানি জমে যায়। এসব যায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে
স্থাপনা নির্মান ও দোকানপাট সহ বিভিন্ন সামগ্রী সড়কের উপর রাখছে অবৈধ দখলকারীরা।
বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর থেকে চতুর্দিকে এসব সড়কে ওয়েল্ডিং কারখানা, বঙ্গা কারখানা, স—মিলের কাঠ,
গাছের গুল, বাসা—বাড়ি তৈরীর ইট, বালু, মেসিনারীজ দোকানপাটের মালামাল দিনের বেলায় লোড,
আনলোড করা সহ সড়কের উপর বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে ওঠায় যানবাহন সহ পথচারী চলাচল হুমকির
সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। গোল চত্বরের আশেপাশের চারটি সড়কের ফুটপাতের বেশির ভাগ অংশ হকারব্যবসায়ীদের দখলে। আছে পান, সুপারী, দই—মিষ্টি, চটপটি—ফুচকা, চা—খাবারের দোকান, ফলের দোকান,
মাছের দোকান। অন্যদিকে বাস সহ ব্যাটারী চালিত চার্জার (ইজি বাইক), রিক্সা, ভ্যান সংকির্ন
সড়কের উপর দাড়িয়ে থেকে আরেক ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। এসব অবৈধ দখলদারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
হকারদের দোকান—পাট ও বাস, ট্রাক সহ ব্যাটারী চালিত চার্জার (ইজি বাইক), রিক্সা, ভ্যানের কারণে
ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের হেঁটে যাওয়ার সুযোগ নেই। বেশির ভাগ পথচারী প্রধান সড়কের উপর দিয়ে
হাঁটছেন। প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের সঠিক নজরদারী না থাকায় এসব অবৈধ স্থাপনা ও
দোকানপাটের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় আলোচনা
হলেও আদৌও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
নজিপুর বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর দিয়ে পাশ্ববর্তি সাপাহার—পোরশা—ধামইরহাট, জয়পুরহাট এলাকার কয়েক
হাজার ছোট—বড় যানবাহন রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন দিবারাত্রী চলাচল করে
থাকে। এবাদেও উওরাঞ্চলের পঞ্চগড় দিনাজপুর থেকে রাজশাহী—নবাবগঞ্জের সাথে অতি সংক্ষেপে সহজ
যোগাযোগ ব্যবস্থা পত্নীতলার নজিপুরের উপর দিয়েই। এছাড়াও দেশের উদ্বৃত্ত ধান ও অন্যান্য পন্য
উৎপাদন এলাকা হিসাবে পরিচিত নওগাঁ জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন উপজেলা পত্নীতলা সহ পোরশাসাপাহারের উৎপাদনকৃত ধান ও অন্যান্য পন্য বহনকারী ভাড়ি ট্রাক সহ বিভিন্ন যানবাহন পত্নীতলার
নজিপুরের উপর দিয়েই চলাচল করে থাকে। নজিপুর চারমাথা গোলচত্বরের চারিদিকে সওজের বিশাল যায়গা
থাকলেও সেগুলি অবৈধ ভাবে দখল হওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে আসা সড়কের উপরই বাস দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে
যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। পথচারীদের চলাচল উপযোগী সড়ক সংস্কার সহ অতিসত্বর নজিপুর চারমাথা
গোলচত্বর ও আশেপাশের এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে উর্দ্ধতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে
এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই সড়ক গুলি দিয়ে অধিক ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হয়।
একই অভিযোগ করেন এই সড়কের নিয়মিত যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা
অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সড়ক গুলির কয়েক দফায় সংস্কারের কাজ হলেও উভয় পাশ
থেকে সড়ক নিচু হওয়ায় পানি সড়কের উপর উঠে যায় এতে এই সড়ক গুলিতে বড় বড় খালা খন্দর হয়ে
নিয়মিত ছোট—বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে নজিপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নজিপুর পুরাতন বাজার
(পত্নীতলা থানা সংলগ্ন) হয়ে সাপাহার সড়কটি থাকলেও পরবর্তীতে আত্রাই নদীর উপর সিদ্দিক প্রতাপ
সেতু নির্মান হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ পাল্টে গিয়ে নজিপুর সরদার পাড়া মোড় বঙ্গবন্ধু স্কয়ার
থেকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম পাবলিক মাঠ সংলগ্ন সড়ক হওয়ায় নজিপুর পুরাতন বাজার
(পত্নীতলা থানা সংলগ্ন) সড়কটি সওজের নজরদারীর বাহিরে চলেগেছে। এতে করে এই সড়কটির
প্রয়োজনীয় সংস্কার যেমন হচ্ছেনা তেমনি অবৈধ দখলদারদের দখলে চলে যাচ্ছে সড়কটির দু’পাস।
এবিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) পত্নীতলার উপ—বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মোজাম্মেল হকের সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতি মধ্যে নজিপুর এলাকার যানজট নিরসনে নজিপুর বাসস্ট্যান্ড ও
চকনিরখীন ঠুকনিপাড়া এলাকায় অবৈধ উচ্ছেদের মাইকিং করা হয়েছে। অতিসত্বর নজিপুর—নওগাঁ
সড়কের পুঁইয়ার সোনালী পেট্রোল পাম্প থেকে নজিপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এবং নজিপুর—ধামইরহাট
সড়কের নজিপুর বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজার থেকে চকনিরখীন মোড় পর্যন্ত একহজার পঞ্চাশ মিটার ঢালাই
কাজ আরম্ভ হবে। পরবর্তীতে নজিপুর—সাপাহার সড়কের নজিপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শেখ রাসেল মিনি
স্টেডিয়াম (পাবলিক মাঠ) পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য মাস্টার ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হবে এবং নওগাঁনজিপুর—জয়পুরহাট সড়কের নওহাটা চৌমাসিয়া থেকে মঙ্গলবাড়ি পর্যন্ত সড়কের প্রসস্তকরন কাজ সহ
সওজের যায়গা গুলো অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে পূনঃউদ্ধারেরও কাজ চলবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।