নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৮২ বার
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এক জনপ্রতিনিধির বাড়ীর সাদের উপর থেকে পুলিশের পিস্তল উদ্ধারের বিষয়ে ধ্রুমজালের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুরো উপজেলাময় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এমনকি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের মধ্যেও চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। কোটচাঁদপুর থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার দিনগত মধ্যে রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনিসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালানো হয় উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের বিদ্যাধরপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম মেম্বারের বাড়িতে। প্রতিটা ঘর তল্লাসীর পর ছাদে পাটখড়ির গাদার উপর খবরের কাগজ ও পলিথিন দিয়ে জড়ানো অবস্থায় একটি পিস্তল ও দুই রাউ- তাজা গুলি উদ্ধার করেন।
নজরুল ইসলাম মেম্বার এক সপ্তাহ আগে সড়ক দূর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হওয়ায় তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে থানায় ফিরে আসেন। পরে বিষয়টি নিয়ে অজ্ঞাত আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং- ৩ তাং- ১৩/০৩/২০২১-ইং। বিষয়টি চাউর হওয়ার পর উপজেলাময় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে যাওয়ায়। রোববার সকালে ঘটনাস্থলে গেলে- নজরুল ইসলাম মেম্বারসহ প্রতিবেশীরা অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের বিষয়টি তুলে ধরেন। নজরুল ইসলাম মেম্বার বলেন, রাত সাড়ে বারোটার দিকে পুলিশ এসে ঘর তল্লাসী করে কিছু না পেয়ে আমাকে নিয়ে ছাদে যায়। ছাদে যেয়ে পাটখড়ির উপরে খোলা জায়গায় রাখা পিস্তলটি পেয়েছে এটা সত্য।
তবে এটা আমাকে ফাঁসানো জন্য আমার বিরোধীরা এখানে অস্ত্র রেখে যেতে পারে বলে তিনি দাবী করেন। তিনি বলেন, ওসি সাহেব কয়েক জায়গায় ফোন করে আমাকে রেখে চলে যান। পুলিশ চলে যাওয়ার পর অস্ত্র এখানে আসার কারণ খুজতে যেয়ে দেখা গেছে ঘরের পিছনে পচাকাঁদা-পানি মাড়িয়ে কেউ এসে মেহগুনি গাছ বেয়ে ছাদে উঠেছিল। যা দেখলে সহজেই অনুমান করা যায়। তার প্রমাণ গাছে উঠার সময় পচাকাঁদার চিহৃ রয়ে গেছে। তিনি বলেন পিছনের জানালা বন্ধ থাকায় পিস্তল ঘরে রাখতে পারিনি বোধ হয়।
তিনি অস্ত্রের প্রকৃত মালিক খোঁজার জন্য বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করবেন বলে জানান। পাশেই বিশ মিটার দুরে আধাপাকা বাড়িতে থাকেন নজরুল ইসলামের মা আনোয়ারা খাতুন তিনি বলেন- রাতে এক পুলিশ পায়ে ও প্যাণ্টে প্রচ- কাঁদা লাগা অবস্থায় আমার বাড়ীতে এসে আমাকে টিউবওয়েল দেখিয়ে দিতে বলেন। সেখান থেকে হাত পা প্যাণ্ট পানিতে পরিস্কার করে চলে যায়। তার পরেই দেখি ছেলের বাড়িতে পুলিশ। তিনি বলেন এখন বুঝতে পারছি ওই পুলিশই বাড়ীর পিছনে দিয়ে পিস্তল রাখতে যেয়ে অন্ধকারে কাঁদার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল।
গাছে, ছানসেটে ও ছাদে থাকা কাঁদা তার প্রমান। প্রতিবেশী আত্তাপ উদ্দীনের ছেলে আকিমুল ইসলাম, জাকির হোসেনের ছেলে নূর হোসেন ও হাসেম আলীর স্ত্রী আনজুরা খাতুন অভিন্ন বক্তব্যে বলেন, আমাদেরকে অভিযানের সময় মেম্বারের বাড়িতে পুলিশ ঢুকতে দেয়নি। পরে আমারা পিস্তল ছাদে পাওয়ার কথা শুনতে পায়। ছাদে পিস্তল কি ভাবে এলো বিষয়টি খোঁজ করতে আমরা অনেকেই বাড়ী পিছনে গেলে কাঁদার মধ্যে বুট জুতাসহ পা দেবে যাওয়ার নমুনা ও জুতার ছাপের আলামত দেখতে পাই। সেই সাথে কাঁদাসহ গাছে উঠার কারণে গাছে ও ঘরের ছানসেটের উপরে কাঁদা দেখতে পাই।
তারা বলেন এতেই পরিস্কার যে কেউ নজরুল মেম্বারকে ফাঁসানোর জন্য এ অস্ত্র ছাদে রেখে এসেছে। তাদের দাবী পুলিশ যাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে এসেছেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। বিতর্কিত অস্ত্র উদ্ধারের সোর্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুল আলম প্রতিবেদককে বলেল এটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়। এখন অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।