ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৭ জুন, ২০২২ ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৮৮ বার
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী তা পরিশোধ করছেন না। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। আর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলোর আয় দিয়ে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারছে না। এতে বেড়ে যাচ্ছে প্রভিশন ঘাটতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত মার্চ শেষে আট ব্যাংক তাদের আয় দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি। উপরন্তু ঘাটতি হয়েছে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তি দুর্বল হয়ে আসছে।
এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু প্রভিশন ঘাটতি হলে ঝুঁকির মুখে পড়ে যান আমানতকারীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চ প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত আট ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। তবে কয়েকটি ব্যাংক প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রেখে দেয়ায় ঘাটতির হিসাবে কম লক্ষ করা গেছে। আর উদ্বৃত্ত সঞ্চিতি রক্ষার ফলে মোট সঞ্চিতির ঘাটতি কমে ১৪ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৪ হাজার ৩৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতির শীর্ষে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের পরিমাণ ৮ হাজার ১৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘাটতিতে অবস্থান করা বেসিক ব্যাংকের ৪ হাজার ১০৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ২২৫ কোটি ৪১ লাখ এবং রূপালী ব্যাংকের ১ হাজার ৫৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। একইভাবে বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৩১ কোটি ২৩ লাখ, স্টান্ডার্ড ব্যাংকের ১৪৬ কোটি ৩১ লাখ ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০২২ সালের মার্চ শেষে দেশে বিতরণ করা মোট ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। হিসাব অনুযায়ী তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ৮৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। কিন্তু সংরক্ষণ করা হয়েছে ৭০ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। ফলে সার্বিকভাবে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি ১৪ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের সঞ্চিতির ঘাটতি ১৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। আর বেসরকারি খাতের চারটি ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি ৩ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা।