ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে বাংলাদেশের

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২২ ১২:১৬ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪১৩ বার


ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে বাংলাদেশের

ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশের। অতীতে সাধারণভাবে দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে সহযোগিতার জন্য দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করতো ঢাকা। এখন সরাসরি সম্পর্কিত নয় কিন্তু অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়েও দিল্লির কাছে সাহায্য চাইছে বাংলাদেশ। এমন দুটি বিষয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। প্রথমটি হচ্ছে র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সাহায্য। দ্বিতীয়ত রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস ক্রয়ের জন্য ভারতের পরামর্শ চেয়েছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি মনে হচ্ছে নতুন বিষয়। এই ইস্যুগুলো আমার কাছে বোধগম্য হচ্ছে না।’

‘এ ইস্যুগুলো কখনও প্রকাশ করা হয় না’— জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন এ বিষয়গুলো তারা হয়তো কখনও প্রকাশ্যে আলোচনা করতে চাইবেন না।’


র‌্যাব ইস্যুতে ভারত কী সহযোগিতা করতে পারে এমন প্রশ্ন করে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। এটি দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করা উচিৎ।’

রাশিয়া থেকে তেল ও গম ক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত একরকম নয়। দিল্লি যে কাজ করে টিকে থাকতে পারে, সেই কাজ করে ঢাকাও টিকে থাকবে— বিষয়টি সেরকম নাও হতে পারে।’

ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসে উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন এমন একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয় যেমন রোহিঙ্গা বা আন্তর্জাতিক নির্বাচন যেখানে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করছে– এ ধরনের ইস্যুতে দিল্লির সহায়তা চাওয়া হতো। কিন্তু এখন যেসব বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে সেটি নতুন।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা সবদেশের সহায়তা চেয়েছি। আবার যখন আন্তর্জাতিক নির্বাচনে বাংলাদেশ অংশ নেয়, তখন বন্ধু দেশ হিসাবে ভারতকে অনুরোধ করা হয় অন্য দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট চাওয়ার জন্য।’

এ ধরনের সাহায্য চাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে বলা হলে সেটি সরকারকে সহায়তা করবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এর ফলে অন্যদেশ অস্বস্তি বোধ করতে পারে।’

গোটা বিষয়টি অত্যন্ত ঘোলাটে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ইস্যুতে প্রকাশ্যে বক্তব্য ক্যাজুয়ালি দেওয়া হচ্ছে নাকি নীতিগত সিদ্ধান্ত— সেটি পরিষ্কার নয়।’

উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে থেকে সাংবাদিকদের জানান, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, নিষেধাজ্ঞার জন্য রাশিয়া থেকে তেল ও গম কিনছে না সরকার। কিন্তু কিভাবে কেনা যায় সে বিষয়ে ভারতের পরামর্শ চেয়েছে বাংলাদেশ।

নতুন নতুন বিষয়ে সহযোগিতার বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দুদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়াটাই এর কারণ। ভারত বৈশ্বিক ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখার জন্য অবস্থান নিচ্ছে।’ বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নতির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের অবস্থায় দ্বিপক্ষীয় যে সম্পর্ক আছে সেটার মাত্রা বাড়তে থাকবে। এটি স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, এখন যে ট্রেন্ড আছে সেটি আর কখনও পিছনে ফেরত যাবে না, সে সুযোগও নেই। দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের মাত্রা যত বেশি এগিয়ে যাবে, সেটি আমাদের অর্থনীতির ক্ষেত্রে ভালো হবে। এছাড়া আঞ্চলিক ও বৈশ্বিকভাবে আমাদের অবস্থানের ক্ষেত্রেও সেটি ভালো হবে।

বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের নিজস্ব অগ্রাধিকার ও উদ্দেশ্য আছে। সব বিষয়ে আমরা একমত বিষয়টি সেরকম নয়। সে বিষয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।


   আরও সংবাদ