ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ জুন, ২০২২ ১২:০৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪০৯ বার
আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত দেশ। বন্যার প্রভাব পড়েছে সব কিছুতেই। বাদ যায়নি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। রাজধানীতে শাক-সবজির কমতি না থাকলেও বন্যার প্রভাবে বেড়েছে দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে গত ৩-৪ ধরেই শাক-সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জুন) সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের এমন চিত্র দেখা যায়।
রায়সাহেব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৪০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন তা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া বেগুন ৫০ থেকে বেড়ে ৮০, টমেটো ১২০ থেকে বেড়ে ১৫০, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে বেড়ে ৫০, আদা ৭০ থেকে বেড়ে ৯০, ঝিঙা ৪৫ থেকে বেড়ে ৫৫ ও শসা ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দামও বেশি। তবে মৌসুম হওয়ায় লেবুর দাম তুলনামূলক কম।
সবজি বিক্রেতা ইমন হোসেন বলেন, গত ৩-৪ দিন ধরেই সবজির দাম বাড়ছে। উত্তরবঙ্গ ও সিলেট বিভাগে বন্যায় বহু ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকের অনেক ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া বন্যায় যান চলাচলও কিছুটা ব্যাহত ছিল, যার কারণে সবজির দাম বাড়ছে লাফিয়ে। দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে অপরিবর্তিত আছে মুদি মালামালের দাম। আর সুপার পামওয়েল কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। এছাড়া গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে খাসির মাংসের দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, খাসির মাংস কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে ৮০০-৮৫০ টাকা থাকলেও ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। বর্তমানে মুরগির ডিম ১২০ টাকা ডজন আর হাঁসের ডিম ১৬৫ টাকা ডজন।
মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুরগির বাজার গত সপ্তাহের মতোই আছে। তবে বন্যার কারণে হয়তো দাম বাড়তে পারে। আজকের বাজারে ব্রয়লার ১৫০ টাকা, সোনালী ২৮০ টাকা ও পাকিস্তানি কক ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা জহিরুল ইসলাম নামের একজন বলেন, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে আমরা হয়তো বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারব না। না খেয়েই মরতে হবে। মাছ-মাংস তো কিনতেই পারি না। একটু সবজি খাব, সেই সবজির দামও অনেক। সব কিছু আমাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে এমন কোনো জিনিস নেই যার দাম বাড়েনি। আর যেটার দাম একবার বাড়ে সেটা কমে না। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়লে বলেন, কিন্তু দাম কমলে আর বলেন না। সিন্ডিকেট করে তারা জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় রুই কেজিপ্রতি ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট কাতল ৩০০ হলেও বড় কাতল ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩শ-১৪শ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ৬০০-৭০০ ও ছোট সাইজের বোয়াল ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ছোট পবদা ৩৫০ আর বড় পাবদা ৫৫০-৬০০, পাঙ্গাশ ১৮০-২২০, আইড় ছোট ৩৫০ আর বড় ৬০০-৭০০ টাকা, টাটকিনি ১৫০, সরপুঁটি ২০০, সামুদ্রিক কোরাল ৪০০, রূপচাঁদা ৬০০, সিলভার কার্প ২০০, চাষের শিং ৩৫০-৪০০, কৈ ১৮০-২০০, শোল ৭০০-৮০০ ও দেশি মাগুর ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুটকির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বিক্রেতা করিম মিয়া বলেন, বাজারে যে শুটকি আছে সেগুলো আগের কেনা। বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জের চাষীদের অনেক শুটকি নষ্ট হয়ে গেছে। সংরক্ষিত অনেক শুটকির ডোল পানিতে ভেসে গেছে। তাই শুটকির দামও বাড়বে।