ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

‘তথ্য আপা’রা গ্রামীণ নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৩০ জুন, ২০২২ ১৭:১১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৫১ বার


‘তথ্য আপা’রা গ্রামীণ নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে

সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ নারীদের তথ্যপ্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সহজলভ্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্য আপারা সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে। 
তথ্য আপা’ মূলত গ্রামীণ এলাকার তথ্যপ্রযুক্তি সেবা কর্মকর্তা, যাদের কাজ স্বভবত: ইন্টারনেট ও সরকারী সেবা সমূহের ব্যবহার, ভিডিও কনফারেন্সিং, ই-লার্নিং, গ্রামীণ নারীদের ই-কমার্সের মতো বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ও সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান করে থাকে।  
নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে “তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন” শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করে, যা দেশের ৮টি বিভাগে ৬৪টি জেলার ৪৯০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। 
প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ে ১৩ টি উপজেলায় এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়। পরে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এটি বাস্তবায়ন করা হয়। বর্তমানে দেশের ৪৯০টি উপজেলায় মহিলাদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রকল্পটির পাঁচ বছর মেয়াদী দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়তি হচ্ছে।  
৪৯০ টি উপজেলায় ‘তথ্যসেবা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের এক কোটি গ্রামীণ মহিলাদের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের হাতিয়াররূপে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তাদের জীবনযাত্রাকে আরো সহজ, সুন্দর এবং উন্নত করাই এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। 

 


বর্তমানে এই ‘তথ্য সেবা কেন্দ্রে’র মাধ্যমে ই-কমার্স সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে এবং গ্রামে ই-লার্নিং এর মাধ্যমে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দলও গঠন করা হচ্ছে। 
প্রকল্প এলাকার প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে একজন করে তথ্যসেবা কর্মকর্তা এবং দুইজন তথ্যসেবা সহকারী রয়েছেন, যারা ‘তথ্যআপা’ নামে পরিচিত, তারা সারা দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা প্রদান করছেন। 
এছাড়া, তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত এই ‘তথ্যআপা’রা তার নিজ প্রকল্প এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ল্যাপটপের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, ব্যবসা, জেন্ডার ও কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যসেবা প্রদান করে থাকেন। 
সকল তথ্যসেবা কেন্দ্রে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল, স্কাইপিতে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মতো সেবা পাওয়া যায়। 
এছাড়াও তথ্যকেন্দ্রগুলিতে বিনামূল্যে চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, পরীক্ষার ফলাফল এবং বিভিন্ন ধরনের সরকারী সেবার তথ্যও পাওয়া যায়। পাশাপাশি তথ্য আপা’রা বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রাস্ত সেবা যেমন ওজন পরিমাপ, ডায়বেটিস ও রক্তচাপ পরীক্ষার মতো সেবাগুলিও বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। 
দ্রুত ও কার্যকরীভাবে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তথ্যআপা’রা স্কাইপি’র মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে সেবা প্রত্যাশীদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। 
এছাড়াও তথ্যআপা’রা নিয়মিত উঠান বৈঠকের আয়োজন করে থাকে, যেখানে তারা তৃণমূল মহিলাদের বিভিন্ন বিষয়, যেমন- স্বাস্থ্য সমস্যা, বাল্যবিবাহ, ফতোয়া, নারীর প্রতি সহিংসতা, আইনি সমস্যা, কর্মসংস্থান বিষয়ে তথ্যপ্রদান ছাড়াও ই-মেইল, মেসেজিং, চ্যাটিং ও ভিডিও কনফারেন্সিং এর মতো ডিজিটাল সেবা সমূহের উপরে শিক্ষামূলক তথ্য প্রদান করে থাকে। 
প্রতিটি তথ্যকেন্দ্র মাসে দু’টি উঠানবৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে প্রায় ৪০-৫০ জন মহিলা অংশগ্রহণ করেন। এ সভাগুলিতে সংশ্লিষ্ট ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা, মৎস কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, আইটি বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা, নারী আইনজীবি এবং সমাজকর্মীবৃন্দ এধরনের সভায় অংশ নিয়ে নারী সর্ম্পর্কিত নীতিমালা, বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রতিরোধ ও পারিবারিক সহিংসতার বিষয়ে তাদের পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। 

 

 


কেরানীগঞ্জ উপজেলার তথ্যসেবা কর্মকর্তা নাজনীন নাহার বলেন, তথ্যআপা’রা বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সাথে পরিচয় ও সেবা প্রদানের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

 


   আরও সংবাদ