স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ৭ জুলাই, ২০২২ ১৭:১৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৬২ বার
শ্রীলংকার সাবেক অধিনায়ক অরবিন্দ ডি সিলভা বলেছেন, আইপিএল ও অন্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগে খেলোয়াড়রা লাভবান হচ্ছে। তবে ভারতের তারকা খেলোয়াড়দের ভিন্ন দেশের টুর্নামেন্টে খেলার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) দারুন ভাবে বিকশিত হয়েছে এবং দেশ বিদেশের মেধাবী ক্রিকেটারদের কাছে এটিই মূল আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। দুই মাসের এই টুর্নামেন্টে খেলে ইংল্যান্ডের জস বাটলার ও অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের মতো তারকারা বিপুল অর্থ উপার্জন করে থাকে।
নিজের বর্নিল ক্যারিয়ারের সময়ও আগ্রাসী ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন অরবিন্দ। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের শিরোপা স্বাদও পেয়েছেন তিনি। গত শতাব্দির শেষভাগে তিনি খেলেছেন ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট লিগে, যেটি ওই সময় সারা বিশ্বের শীর্ষ খেলোয়াড়দের নৈপুন্য শিখতে ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আকৃস্ট করতো।
১৯৯০ এর দশকে ইংলিশ কাউন্টি ডক্রকেটে কেন্টের হয়ে খেলা ৫৬ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার বলেন,‘ এটি তখনকার কাউন্টি ক্রিকেটের মতো, যেটি ইংলিশ ক্রিকেটারদের সুবিধা দিয়েছে। আইপিএল, বিগ ব্যাশ, ইংল্যান্ডে দ্য হান্ড্রেড ও টি-২০ ব্লাস্ট, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ(বিপিএল) এগুলো এমন টুর্নামেন্ট, যা খেলোয়াড়দের মেধা বিকাশে সহায়তা করে।’
২০০৮ সালে শুরু হওয়া আইপিএল বিশ্বজুড়ে অনুকরনীয় টুর্নামেন্টের জন্ম দিয়েছে। তবে সম্প্রচার স্বত্ব নিলামে বিশাল অংকের অর্থের বিনিয়োগ ঘটেছে। নিলামে সম্প্রচার স্বত্বের মূল্য উঠেছে ৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ একেকটি ম্যাচের মুল্য উঠেছে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যেটি ছাড়িয়ে গেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলকে। প্রিমিয়ার লিগের একেকটি ম্যাচের মুল্য ধরা হয়েছে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অরবিন্দ বলেন, ভারতের উচিৎ এই খেলাটির বিকাশে ছোট দেশগুলোকে সহায়তা করা, বিশ্বব্যাপী ওই খেলার মান বাড়াতে ও দক্ষতার স্তর উন্নত করতে সম্পদের অংশিদারিত্ব বাড়ানো। যার সুবিধা শেষ পর্যন্ত আইপিএলই ভোগ করবে।
লংকান এই সাবেক তারকা বলেন,‘ প্রভাবশালী একটি দেশ থাকলে সেটা ভারত। তারা প্রিমিয়ার লিগে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। কারণ অন্য লীগে ভারতীয় ক্রিকেটারদেরকে খেলার অনুমতি দেয়া হয় না।
সুতরাং এক পর্যায়ে এটির মানের তারতম্য ঘটতে পারে। সত্যিাকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে এটি নিন্মমুখি হয়ে পড়তে পারে। কোন এক সময় এটি বিশ্বব্যাপী এই খেলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ভারত যদি অন্য দেশগুলোকে সহযোগিতার উপায় খুঁজে না পায় এবং এটিকে আকড়ে ধরে রাখে, তাহলে এটি হবে বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য একটি নেতিবাচক দিক। ’
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (আইসিসি) উচিৎ হবে ক্রিকেটের উন্নয়নের দায়িত্ব গ্রহন করা। অন্যথায় আমাদেরকে দেখতে হবে জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিন আফ্রিকার মতো পরিণতি। তারা নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি, যা আমরা চাই না।’
শ্রীলংকান ক্রিকেটাররা অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে আইপিএল থেকে লাভবানই হচ্ছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ১.৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনেছিল লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। ১০ দলের সর্বশেষ আসরে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন।
লংকান ভার্সন এলপিএল সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২১ সালে। খুব বেশী প্রচারনা না থাকলেও পাকিস্তানও আয়োজন করে যাচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগ। এগুলোরও প্রশংসা করেছেন অরবিন্দ।
শ্রীলংকায় চলমান দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিক দল। অরবিন্দ বিশ্বাস করেন দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়াবে লংকানরা। আগামী শুক্রবার থেকে গলে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। আর্থিক সংকটে পড়ে যাওয়া দেশটিতে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসায় অস্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি। কারণ আর্থিক সংকটে জর্জরিত দেশটির জনগনের মুখে এর দ্বারা কিছু সময়ের জন্য হলেও হাসি ফুটেছে।
অরবিন্দ বলেন,‘ এমন পরিস্থিতিতেও আমরা তাদের মধ্যে আবেগ দেখেছি। ওয়ানডে সিরিজে কয়েকটি ম্যাচে দর্শকপুর্ন স্টেডিয়ামও দেখেছি। আমাদের দেশে এসে এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমি অস্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। এটি ছিল দুর্দান্ত। তাদের প্রতি আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’