ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ জুলাই, ২০২২ ২১:১৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫০৬ বার
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির কার্যক্রম উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
বুধবার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বদলি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তিনি। আজ পরীক্ষামূলকভাবে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নতুন পদ্ধতিতে ১৮টি বিদ্যালয়ে শূন্য পদে বদলি করা হয়েছে। নতুন এই পদ্ধতিতে আগামী মাস (আগস্ট) থেকে সারা দেশে বদলির কাজ শুরু করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে। তবে ঢাকাসহ ১১টি মহানগরে বদলির এই কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে। মহানগরের ক্ষেত্রে পৃথক ব্যবস্থা করা হবে। তাই মহানগরের বাইরে কর্মরত কোনো শিক্ষকের মহানগরে বদলি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বদলির এ কাজটি হবে পুরোপুরি অনলাইনে। নির্ধারিত একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে নির্ধারিত আইডি ব্যবহার করে শিক্ষকদের বদলির জন্য আবেদন করতে হবে। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ওই শিক্ষক বদলির যোগ্য কি না বা কোন বিদ্যালয়ে বদলি হবেন, তা নির্ধারণ হবে।
নতুন এই পদ্ধতিতে বদলি প্রত্যাশী শিক্ষক অনলাইনে আবেদনটি করার পর সেটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনিও ওই সফটওয়্যার ব্যবহার করেই যাচাই করে দেবেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি সেটি যাচাই করে পাঠাবেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (ডিপিইও) কাছে। ডিপিইও সেটি মঞ্জুর করে পাঠিয়ে দেবেন আবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। তিনি তখন বদলির বিষয়ে আদেশ জারি করবেন এবং শিক্ষক সেটি অনলাইনেই জেনে যাবেন।
তিন ধাপের এই যাচাইয়ে প্রত্যেক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তিন দিন করে সময় পাবেন। এই তিন দিনের মধ্যে যাচাই করে নিষ্পত্তি না করলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাচাইয়ের জন্য নিয়োজিত পরবর্তী ব্যক্তির কাছে চলে যাবে। তখন নিষ্পত্তি না করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বদলিকে কেন্দ্র করে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং উপজেলা পর্যায়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো। নানা জায়গা থেকে বদলির জন্য সুপারিশ, যোগাযোগ, অনুরোধ, আবেদন, সাক্ষাৎ এগুলো ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এতে শিক্ষকেরা ঠিকমতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারতেন না, পাঠদান কার্যক্রম বিঘ্নিত হতো। এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তির সহায়তায় সফটওয়্যার তৈরি করে বদলির কাজটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে শিক্ষকদের আর এখানে–সেখানে বদলির জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না, কারও কাছেও যেতে হবে না।
বর্তমানে সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি। এগুলোতে মোট শিক্ষক আছেন প্রায় পৌনে ৪ লাখ। এখন নতুন করে আরও ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে গত ৩০ জুন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) উদ্বোধন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। পরীক্ষামূলকভাবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত যেসব শিক্ষক ওই উপজেলায় বদলির আবেদন করেছিলেন, তাদেরই বদলির আওতায় আনা হয়েছে। যার মাধ্যমে আজ বদলি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) মহিবুর রহমান।